পূর্বদেশ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কাতার সফরকালে ফিলিস্তিনি ভূখন্ড গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্খা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ট্রাম্প বলেন, তিনি চান যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখলে নিক এবং ভূখন্ডটিকে একটি ‘মুক্ত অঞ্চল’ হিসেবে গড়ে তুলুক।
গতকাল বৃহস্পতিবার কাতারের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের এক আলোচনা সভায় ট্রাম্প একথা বলেন। গাজায় ইসরায়েলের তুমুল বিমান হামলা এবং শত শত ফিলিস্তিনির মৃত্যু খবর আসতে থাকার মধ্যেই ট্রাম্প ফের গাজা দখলে নিতে চাওয়ার কথা বললেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজা নিয়ে নিলে, এটিকে মুক্ত অঞ্চল (ফ্রিডম জোন) বানালে, আমি মনে করি আমি গর্বিতই হব। ভাল কিছু হতে দিন। মানুষজনকে ঘরে রাখুন, যেখানে তারা নিরাপদে থাকবে। হামাসকেও মোকাবেলা করা হবে। গাজার জন্য আমার পরিকল্পনা আছে। যেগুলো আমি মনে করি ভাল। চলুন গাজাকে একটি ‘ফ্রিডম জোন’হিসেবে তৈরি করি। এখানে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িত হতে দিন’। খবর বিডিনিউজের
গাজার সমস্যা কখনো সমাধান করা হয়নি উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা যদি এটি দেখেন, আমার কাছে বিমান থেকে তোলা ছবি আছে, আমি বলতে চাইছি- সেখানে বাস্তবিকই কোনো ঘরবাড়ি দাঁড়িয়ে নেই। মানুষজন ধসে পড়া বাড়িঘরের ধ্বংসস্তুপের নিচে বাস করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এ এক ভয়ঙ্কর মৃত্যু। আমি এলাকাটিকে একটি মুক্ত অঞ্চল হিসাবে দেখতে চাই’।
ট্রাম্প এর আগে গাজা থেকে মানুষজনকে মিশর, জর্ডানসহ বিভিন্ন দেশে সরিয়ে নিয়ে ভ‚খন্ডটিকে মধ্যপ্রাচ্যের ‘রিভিয়েরা’ করে গড়ে তুলতে চান বলে জানিয়েছিলেন। তবে গাজার ফিলিস্তিনিরা এ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছিল। তারা এ পরিকল্পনাকে ১৯৪৮ সালের ‘নাকবা’ বা ‘বিপর্যয়ের’ সঙ্গেই তুলনা করেছিল। অনেকেই বলেছিল, তারা বরং তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িতেই থাকবে।
গাজায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত হলে তারা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের গহীনে নিমজ্জিত হবে। ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসনের পর এটিই হবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় হস্তক্ষেপ। বিদেশে এভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়াকে অনেক আমেরিকানই ভাল চোখে দেখে না।
গাজার ফিলিস্তিনিদের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলায় ইসরায়েলে ১২০০ জনের মতো মানুষ নিহত হয়। হামাস যোদ্ধাদের হাতে জিম্মি হন ২৫১ জন।
সেদিন থেকেই ইসরায়েলে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে হামলা চালানো শুরু করে। সেই থেকে গাজায় যুদ্ধ চলছে। ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত সেখানে ৫২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।