গাজা এক মৃত্যুপুরী অন্তহীন মৃত্যুর চক্রে নাগরিকরা

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় ১৮ মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি। হামলার পাশাপাশি ইসরায়েল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনের এই উপত্যকাকে মৃত্যুপুরী বলে আখ্যায়িত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এছাড়া গাজার বেসামরিক নাগরিকরা অন্তহীন মৃত্যুর চক্রে রয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন এবং গাজায় মানবিক সাহায্যের সরবরাহের ওপর ইসরায়েলি অবরোধের নিন্দা জানিয়েছেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় এক ফোঁটাও সাহায্য আসেনি। খাবার নেই, জ্বালানি নেই, ওষুধ নেই, বাণিজ্যিক সরবরাহ নেই। সাহায্য শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে, ভয়াবহতার দ্বার আবার খুলে গেছে। গাজা এক মৃত্যুপুরী এবং সেখানকার বেসামরিক নাগরিকরা অন্তহীন মৃত্যুর চক্রে রয়েছেন।
গাজার জনগণের খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ এবং জনস্বাস্থ্য পরিষেবা রক্ষণাবেক্ষণ না করতে পারার বিষয়ে তিনি বলেন, আজ এর কিছুই ঘটছে না। কোনো মানবিক সরবরাহ গাজায় প্রবেশ করতে পারবে না। ক্রসিং পয়েন্টগুলোতে খাদ্য, ওষুধ এবং আশ্রয়ের সরবরাহ স্তূপীকৃত হচ্ছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম আটকে আছে।নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জাতিসংঘ প্রধান গাজার বর্তমান পরিস্থিতিকে আন্তর্জাতিক আইন এবং ইতিহাসের দৃষ্টিতে ‘সম্পূর্ণ অসহনীয়’ বলে বর্ণনা করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, অমানবিকীকরণ বন্ধ এবং শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য জরুরি পদক্ষেপ না নিলে পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি একই রকম সংকটে পরিণত হতে পারে।
গুতেরেস গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি এবং পূর্ণ মানবিক প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধারের আহবান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলে ত্রাণ প্রবেশের ফলে ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক সংকট আরও তীব্রতর হয়েছে।
‘আমাকে স্পষ্টভাবে বলতে দিন, আমরা এমন কোনো ব্যবস্থায় অংশ নেব না, যা মানবতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতার মতো মানবিক নীতিগুলোর পূর্ণ সম্মান রাখে না’, বলেন গুতেরেস।
২৩ লাখ মানুষের গাজা উপত্যকায় ২ মার্চের পর থেকে কোনো সহায়তা পৌঁছানো হয়নি। কারণ ইসরায়েল গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ করে রেখেছে, ফলে খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং জ্বালানিসহ সবকিছু প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।
গুতেরেস বলেন, পুরো এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, গাজায় এক বিন্দু ত্রাণও পৌঁছায়নি। খাবার, জ্বালানি, ওষুধ কোনো বাণিজ্যিক সরবরাহ পৌঁছায়নি।