পূর্বদেশ ডেস্ক
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন। গাজার খান ইউনিস, রাফা ও বেইত লাহিয়া শহরে চালানো এসব হামলায় অন্তত ১১টি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে নবজাতক, শিশু ও নারী রয়েছেন। ঘুমন্ত অবস্থায়ই তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে খান ইউনিসের তিন পরিবারের ১৮ জন, রাফার নিকটবর্তী মোসবেহের এক পরিবারের ১০ জন এবং বেইত লাহিয়ার এক পরিবারের সাতজন রয়েছেন। খবর বিডিনিউজের
এদিকে তারা শুধু ‘সন্ত্রাসীদের’ লক্ষ্যস্থল করে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। বেসামরিকদের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য তারা হামাস ও মিত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছে।হামাস ও মিত্র গোষ্ঠীগুলো বেসামরিকদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলি বাহিনীর।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়ে পহেলা মার্চ শেষ হয়। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে হওয়া সমঝোতা অনুযায়ী দ্বিতীয় পর্বের আরেকটি যুদ্ধবিরতি শুরু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলোচনা হলেও কোনো সমঝোতা না হওয়া ও এই নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে অচলাবস্থা চলার পর মঙ্গলবার গাজায় ভয়াবহ বোমাবর্ষণ করে ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বুধবারও বিমান হামলা অব্যাহত ছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খলিল আল-দাকরান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৭১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৯০০ জন।
তিনি জানান, ইসরায়েলের এসব নির্বিচার হামলায় আহত অনেকেই প্রয়োজনীয় ওষুধ ও উপকরণের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন। আহতদের প্রায় ৭০ শতাংশ শিশু ও নারী আর তাদের বেশিরভাগের জখমই গুরুতর। গাজায় প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালানোর পর এবার স্থল অভিযান বাড়ানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।
বুধবার দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তারা গাজার মধ্যাঞ্চলে ও দক্ষিণাঞ্চলে ‘পিনপয়েন্ট’ স্থল অভিযান শুরু করেছে। তাদের সেনারা গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে বিভক্তকারী নেটজারিম করিডোরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা গাজার ‘উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে আংশিক বাফার’ এলাকা তৈরির জন্য ‘তৎপরতা’ শুরু করেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বুধবার এক ভিডিও বার্তায় বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে দিতে ফিলিস্তিনকে ‘শেষবারের মতো সতর্ক’ করে দিয়েছেন।
ইসরায়েল বলছে, হামাস এখনও ৫৯ জনকে জিম্মি করে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হয়। হামাসকে ‘শেষ হুঁশিয়ারি’ দিয়ে কাটজ বলেন, যদি কোনো দাবি মানা না হয়, তবে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস ও ধ্বংসযজ্ঞই’ হবে বিকল্প।