পূর্বদেশ ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। চলমান যুদ্ধবিরতি আকস্মিক এক তরফাভাবে ভঙ্গ করে দখলদার বাহিনীর এই নজিরবিহীন হামলায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় চলছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামলার পাশাপাশি গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। পাশাপাশি নতুন করে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের জোরপূর্বক সরে যেতে বাধ্য করছে। খবর বাংলানিউজের।
হামাস বলেছে, ইসরায়েল গাজার অবরুদ্ধ ও নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর বিশ্বাসঘাতকতামূলক হামলা চালিয়ে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙেছে। ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদও একই অভিযোগ করে বলেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবেই ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর থাকা যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি ভেঙে দিয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতি প্রসারিত করার আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি এই সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
চুক্তি লঙ্ঘন করে রোজার মধ্যে আকস্মিক এই বিমান হামলার কারণে গাজার নিরীহ লোকজন হতবিহŸল হয়ে পড়েছেন। উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে যেন রক্তের নহর বয়ে গেছে। নিরীহ শিশুদের লাশের সারি সামনে রেখে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে গাজার আকাশ-বাতাস।
গাজায় খাদ্য-পানি-চিকিৎসার সংকট : প্রতিনিয়ত হামলা-হত্যায় গাজার পরিস্থিতি একেবারেই ন্যুজ। এই অবস্থায় সেখানকার সব ধরনের খাদ্য, পানীয় ও চিকিৎসা উপকরণ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে আহত মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে গাজার চিকিৎসকদের জন্য। গাজার ‘মুখ্য’ হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় আহতের সংখ্যা এত বেশি, তার নড়বড়ে হাসপাতালে সবাইকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।
মুহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, আমাদের সব ধরনের উপকরণ, বিশেষ করে চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই। ফলে প্রতি মিনিটে, একজন আহত ব্যক্তি মারা যাচ্ছে। গাজা শহর ও উত্তর গাজায় মাত্র চারটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ছিল। কিন্তু এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মৌলিক সরঞ্জামের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের জন্য নির্দিষ্ট এলাকাগুলোয় পৌঁছানোও ‘অত্যন্ত কঠিন’ ছিল।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জায় ইসরায়েলের নির্বিচারে বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যাও অনেক। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় ব্লাড ব্যাংকগুলোয় প্রয়োজনীয় মজুদ শেষ। একটি বিবৃতি জারির মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে নাগরিকদের রক্তদানে আহবান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।