গর্ভবতী মা পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেলে বাচ্চা পুষ্টিবান হবে

6

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস.এম শফিউল্লাহ বলেছেন, একজন গর্ভবতী মা পরিমাণমত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারলে তার বাচ্চা পুষ্টিবান হবে এবং জাতি উপকৃত হবে। কেউ যাতে অপুষ্টিতে না ভ‚গে সে জন্য সর্বত্র জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। যে দেশের গড় আয়ু বেশি সে দেশে উন্নত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্যখাতকে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলেই মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে, কমেছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার। গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলা সিভিল সার্জন কাযালয় আয়োজিত জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের কথা ভাবলে পুষ্টির কথা চিন্তা করতে হবে। পুষ্টির অভাবে জন্মের পর শিশুরা রোগাক্রান্ত, বিকলাঙ্গ ও প্রতিবন্ধী হয়। আগামী ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে পুষ্টিবান সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়টি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। একটি শিশু জন্মগ্রহণের সাথে সাথে মায়ের বুকের শাল দুধ দিতে হবে। শিশুর জন্মের দুই বছর পর্যন্ত বুকের দুধের পাশাপাািশ পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবার দিতে হবে। স্বাস্থ্যখাতে আরও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্যকর্মী আরও বৃদ্ধি করা হলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাস্থ্যখাত অনেকদূর এগিয়ে যাবে। এজন্য আমাদেরকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
আগামী ১ জুন অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৪ উপলক্ষে জেলা পর্যায়ের এডভোকেসী ও পরিকল্পনা সভা এবং ‘মাল্টি-সেক্টরাল নিউট্রিশন কো-অর্ডিনেশনে সহায়তাকরণ’ বিষয়ক জেলা পর্যায়ের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।
ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার পুষ্টির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ (বিএনএনসি) ২২টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করে, যেগুলো পুষ্টি কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। গর্ভবতী নারীদের পুষ্টি ও মনো-সামাজিক বিকাশের দিকে নজর দিতে হবে। এর মাধ্যমে শিশুদের মস্তিষ্কের সার্বিক গঠন নিশ্চিত করা যাবে। শিশুর জন্মের পর পর জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।জন্মের সাথে সাথে শিশুকে অবশ্যই মায়ের বুকের শাল দুধ খাওয়াতে হবে। এটি টিকা হিসেবে কাজ করবে। মা ও শিশুকে নির্ধারিত সময়ে টিকাগুলো দিতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্ষুদে ডাক্তারের মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে পুষ্টি বার্ত পৌঁছায় দিতে হবে।
সভায় পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, আমাদের শরীরকে ঠিক রাখতে হলে পরিমাণ মতো পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবার সচেতনতা আবশ্যক। পুষ্টিবান জাতি গঠনে আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণে অন্যদেরকে উৎসাহিত রতে হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জেবিন চৌধুরী, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফরিদুল আলম, মহিলা বিষয়ক উপ-পরিচালক মাধবী বড়ুয়া, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াজেদ চৌধুরী অভি ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মো. নুরুল হায়দার। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে পুষ্টি কার্যক্রম বিষয়ে আলোকপাত করেন ইউনিসেফ’র নিউট্রিশন অফিসার ডা. উবা সুই ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ’র এরিয়া প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনি রোজারিও। সভায় চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।