পূর্বদেশ ডেস্ক
বৈশাখের শেষবেলায় এসে দেশজুড়ে বয়ে চলা তাপপ্রবাহের মধ্যে, তিনদিনের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর; সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বয়ে যেতে পারে তীব্র তাপপ্রবাহ। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপামাত্রা সামান্য বাড়ার আভাস এসেছে আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে।
আর অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় আরো বলা হয়েছে শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
চৈত্রের শেষ আর বৈশাখের শুরুতে সাধারণত গরমের তীব্রতায় হাসফাঁস করতে হয়। তবে এবারে তীব্র গরম দেখা যাচ্ছে বৈশাখের শেষ দিকে এসে। খবর বিডিনিউজের
দেশের ৪৫ জেলার উপর দিয়ে বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেদিন রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারি, রাজারহাট, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল, পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল।
এছাড়া ওইদিন সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিবদ্ধ হয় চুয়াডাঙ্গায়, এ সময় ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়।
৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়।আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
চুয়াডাঙ্গায় পারদ চড়েছে সাড়ে ৩৮ ডিগ্রিতে:
সাধরণত মধ্যদুপুরে মাঝারি তাপপ্রবাহ দেখা দেয় খুবই কম; তবে চুয়াডাঙ্গার জন্য দিনটি ব্যতিক্রম। গতকাল শুক্রবার বেলা ১২ টাতেই জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা মাঝারি তাপপ্রবাহ বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘সাধারণত বেশিরভাগ দিনে বেলা ১২ টায় মাঝারি তাপপ্রবাহ দেখা দেয় না। এই সময়ে তাপমাত্রা বেশি হলেও তা থাকে তাপপ্রবাহের নিচে কিংবা মৃদু তাপপ্রবাহের আওতায়। আজ এর ব্যতিক্রম হল’।
এদিন সকাল থেকেই তীব্র রোদ আর গরমের কারণে মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা ছিল কম। নি¤œআয়ের মানুষ রোদে ও গরমে কাজ করতে পারছেন না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।
সকাল থেকে শহর ঘুরে দেখা গেছে, রিকশা ও ভ্যানচালকরা কাজ করতে হাঁপিয়ে ওঠছেন। অনেককে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। রোদ-গরমের মধ্যেই অনেক দিনমজুরকে জরুরি কাজ করতে দেখা গেছে। ঘামে তাদের পুরো শরীর ভিজে গেছে। খবর বিডিনিউজের
শহরের ইসলামপাড়ার ভ্যানচালক আকরাম হোসেন বলেন, ‘ভ্যান চালাতে পারছি না। আজ অনেক রোদ। গা চ্যাট চ্যাট করছে। কাজ না করলে সংসার চলবে না। তাই রোদের মধ্যে বের হয়েছি’।
আবহাওয়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান জানান, তাপমাত্রা আরও বাড়বে। ১৩ মে পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকবে বেশি। তারপর বৃষ্টি হতে পারে। পরে নিম্নচাপও দেখা দিতে পারে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, ‘তীব্র গরমে রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। বয়স্করা ঘরে থাকলেই নিরাপদে থাকবেন। খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তরল খাবার বেশি খেতে হবে’।