গরমেও তরমুজের দাম কমছে মিলছে ২০-৩০ টাকায়ও

7

মনিরুল ইসলাম মুন্না

এক মাস আগেও ১৫০ টাকার নিচে তরমুজ পাওয়া যায়নি। রমজানের প্রথম থেকেই বেড়েছিল তরমুজের দাম। তখন অনেক ক্রেতা দাম শুনে আর কেনেননি। খেটে খাওয়া মানুষের জন্য তরমুজ খাওয়া ছিল দিবাস্বপ্নের মতো। তবে রমজানের শেষের দিকে এসে কমতে শুরু করে তরমুজের দাম। ঈদের পর গরমের তীব্রতা বেড়ে গেলে হু হু করে বাড়ে পানিজাতীয় এই সুস্বাধু ফলটির দাম। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার গরমের তীব্রতা কমে আসার সাথে সাথে চট্টগ্রাম নগরের অনেক স্থানেই অত্যন্ত কম দামে মিলছে তরমুজ। দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের তরমুজ ২০ থেকে ৩০ টাকায় কিনতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ফিরিঙ্গী বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভ্যানে করে ছোট আকারের তরমুজগুলো নগরীর বিভিন্ন বাজারসহ অলি-গলিতে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করা হচ্ছে। অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেক বিক্রেতার তরমুজ দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ছোট আকারের তরমুজগুলো সুস্বাদু হওয়ায় একজনই একটি পুরো তরমুজ সাবাড় করতে পারছেন।
মিল্লাত নামে এক বিক্রেতা জানালেন, প্রতিপিছ তরমুজ ৩০ টাকা জেনেই আধা ঘণ্টায় সব তরমুজ বিক্রি শেষ। একেবারে ছোট সাইজের তরমুজগুলো ২০ টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছি।
ক্রেতারা জানান, রমজান মাসে বাড়তি সুযোগ কাজে লাগিয়ে তরমুজের দাম বাড়িয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তারা একটা সিন্ডিকেট তৈরি করে রেখেছিলেন। তাই নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে তরমুজ কিনে খাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তবে এখন একটু বৃষ্টি হওয়ায় গরমের তীব্রতা কমে এসেছে। ফলে তরমুজ সিন্ডিকেট কমের মধ্যেই তরমুজ ছাড়ছেন। এখন নি¤œ ও মধ্য আয়ের মানুষেরা তরমুজ কিনছেন।
তরমুজ কিনতে আসা মারুফুল ইসলাম হৃদয় বলেন, ‘রমজানের প্রথম দিকে বড় আকারের তরমুজ কিনেছি ৪০০ টাকা দিয়ে। এখন একই সাইজের তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে ১২০ টাকায়। আর এসব তরমুজের দাম বাড়িয়েছিল বাজার সিন্ডিকেটরা। এখন সেই তরমুজের দাম অনেক কমে এসেছে।ইফতারের সময় তরমুজ খেতে ভালো লাগে বিধায় অনেকে ইফতারের নানান আইটেমের সাথে তরমুজ যুক্ত করতেন। সে সুযোগকে কাজে লাগিয়েছিলেন তরমুজ সিন্ডিকেট। বাজারে খুচরা বিক্রেতাদের বেশি দামে তরমুজ বিক্রি করতেন তারা। ফলে খুচরা দোকানদাররাও ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করতেন।
চকবাজারে আসা ক্রেতা ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘রোজায় যেন আগুন লেগেছিল তরমুজের বাজারে। সুযোগ বুঝে তরমুজের দাম বৃদ্ধি করেছিল ব্যবসায়ীরা। এখন কিছুটা বৃষ্টি হওয়ায় তরমুজের আগ্রহ কমে গেছে। তাই তরমুজের দাম অনেক কমেছে। আশা করছি আরও দাম কমবে’।
ফিরিঙ্গী বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, ‘যখন তরমুজ বেশি দাম দিয়ে কিনি তখন বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আর কম দামে কিনলে কমে বিক্রি করি। এখন তরমুজের দাম কমেছে তাই আমরা কম দামে বিক্রি করছি। আমি সরাসরি ট্রাকে করে তরমুজগুলো নোয়াখালী ও পটুয়াখালী থেকে এনেছি। আমার কম দামে কেনা, তাই কম দামে বিক্রি করতে পারছি। এখানে ছোট তরমুজগুলো ২০ টাকা; মাঝারিগুলো ৬০ থেকে ৮০ টাকা আর বড় গুলো ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ পূর্বদেশকে বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। কোনো সিন্ডিকেট তৈরি করতে দেওয়া হবে না। দ্রব্যমূল্য অতিরিক্ত নিলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার দর স্বাভাবিক রয়েছে, আশা করি এমন স্বাভাবিক থাকবে। তা ছাড়া বাজার দর স্বাভাবিক রাখার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি’।