গণতন্ত্র ফেরাতে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি : খসরু

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘নির্বাচন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
গতকাল সোমবার দুপুরে লন্ডন থেকে ফিরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনালের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে তারা (লন্ডনের বৈঠকে দুই নেতা) সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন। খবর বিডিনিউজের।
শুক্রবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণা আসে, তাতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আভাস আছে।
এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। জামায়াত মনে করে, প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
অন্যদিকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী অভিযোগ করেছেন, জনপ্রত্যাশা ছাপিয়ে বিদেশের মাটিতে নির্বাচন নিয়ে ব্ঠৈক করে দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমন সিদ্ধান্তকে গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষার সঙ্গে ’প্রতারণার সামিল’ বলেও অভিযোগ তার।
এ দুটি দলের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আমীর খসরু বলেন, আমি মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং সবাই তার মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই তার নিজের মতামত দেবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে সকালে লন্ডন থেকে ঢাকা ফেরেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। প্রধান উপদেষ্টার সাথে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকের দুই দিন আগে ঢাকা থেকে লন্ডন যান তিনি।
নির্বাচনের ‘অতি প্রয়োজনীয়তা’ তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশের মানুষ গত ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই তারা দ্রæততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণ চান। এটিই ছিল আন্দোলনের মূল প্রত্যাশা।
বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সেই পথেই দেশ অগ্রসর হবে।
সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।
ফ্যাসিস্টদের বিচার প্রক্রিয়া, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটা বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে।
যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরও প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে। ফলে বিচার ওদের হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐক্যমতের মধ্যে এসেছি এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।
ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং আমরা চেষ্টা করব যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।