ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বর ও নৃশংস আওয়ামী দুঃশাসন উৎখাতের সংগ্রামের সূচনা করেছে আমাদের গর্ব শিক্ষার্থী সমাজ। তাদের অসীম সাহস, ত্যাগ ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব আমাদের গর্বিত করেছে।
গতকাল শনিবার বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মহানগরীর উদ্যোগে লালদীঘি ময়দানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্রসংস্কারে ঘোষিত ৯ দফা প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রæত সুস্থ্যতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত থেকেছে। ১৯ জুলাইয়ে আমরা পরিষ্কার করে জানিয়েছি, সরকারের পদত্যাগই একমাত্র সমাধান। শুরু থেকেই ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। সেজন্য আমরা গর্ববোধ করি।
তিনি আরো বলেন, সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশা করছে দেশবাসী। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি না মেনে খুনি হাসিনা সরকার নির্বিচারে পাখির মতো গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এই বর্বর হত্যাযজ্ঞ দেখে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, খুনি হাসিনাসহ সকল হত্যাকারী, বিদেশে অর্থপাচারকারী, দুর্নীতিবাজদের বিচার করতে হবে। পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে এনে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশা করছেন দেশবাসী। বিগত জালেম সরকারের নির্বাচন কমিশনে জড়িতদের বিচার করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। দেশের সংখ্যালঘুদের জান-মাল ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তা দেয়া ঈমানী দায়িত্ব বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সংগঠনের মহানগর সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ জান্নাতুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ড. বেলাল নুর আজিজ, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক, মুফতী দিলাওয়ার হোসাইন সাকী, সদস্য ও নগর সেক্রেটারি আল মুহাম্মদ ইকবাল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ মুনতাসির আহমদ, প্রচার সম্পাদক, ইউছুফ মালিক, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ মহানগরের সেক্রেটারি মাওলানা মুফতী গোলাম কিবরিয়া শরীফী, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম মহানগরের সভাপতি মাওলানা দিদারুল মাওলা, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন মহানগর সভাপতি, শ্রমিক নেতা ওয়ায়েজ হোসেন ভূঁইয়া, ইসলামী যুব আন্দোলন মহানগরের সভাপতি আল মিজান মোহাম্মদ নোহেল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মহানগরের সভাপতি মুহাম্মদ ইবরাহীম খলিল প্রমুখ।
অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ বলেন, খুনি হাসিনার পতনের পর যারা দখলদারিত্বে মেতে উঠেছে, বিরোধী মতের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি ধ্বংসে লিপ্ত হয়েছে, তাদেরকে বলে দিতে চাই আওয়ামী লীগের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাইলে আমরা তাদেরকে ছেড়ে দিবো না। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে নিতে হবে। তিনি ছাত্রসমাজকে আগামীর নেতৃত্বের জন্য যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, নিরীহ নিরাপরাধ, বিভিন্ন মত ও পথের মানুষ, সংখ্যালঘুদের জানমাল ও উপাসনালয়ের হেফাজতের দায়িত্ব পালন করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে আরো ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তি