খুনিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে সভা-মানববন্ধন

1

রাউজান প্রতিনিধি

রাউজানে প্রকাশ্যে গুলি করে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। উপজেলার নোয়াপাড়া পথেরহাট বাজারে এ কর্মসূচি থেকে প্রশাসনকে দ্রæত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এদিকে দিনে-দুপুরে এভাবে গুলি করে হত্যার ঘটনায় রাউজানে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ঘটনার পর বিকেলে একই গ্রামের ওমান প্রবাসী মুহাম্মদ মহিউদ্দিন নামের ওই প্রবাসীর বাড়িতেও হামলা এবং ভাঙচুর করা হয়। প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের দাবি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই বাড়িতে ঢুকে একদল দুবর্ৃৃত্ত। এসময় বাড়ির ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। হার্ডডিস্ক নিয়ে যায় তারা। এছাড়া এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সভা করেছে হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন। রাউজানের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কারণে উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়ে গত শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম কোর্টের আইনজীবী ভবনের কার্যালয়ে এ সভা করেন সংগঠনটির নেতারা। গতকাল শনিবার দুপুরে নোয়াপাড়া পথেরহাট বাজারে জাহাঙ্গীর হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন এ পরে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। শেষে ওই বাজারে চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন উত্তর জেলা বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মাস্টার, জেলা বিএনপির সদস্য মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি কাসেম রানা, কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত সাবেক ব্যবস্থাপক আব্দুল মালেক, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবসার, মুহাম্মদ দিদারুল আলম, মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহব্বায়ক জানে আলম প্রমুখ।
সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল শনিবার বেলা ১টার দিকে নিহত জাহাঙ্গীরের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে আনা হয়। এসময় শত শত মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করেন। সবার মুখে একটাই কথা জাহাঙ্গীর রাজনীতি করতেন না। অমায়িক মানুষ ছিলেন। তার মত ভালো মানুষ এলাকায় নেই। স্বজনরা জানিয়েছে, বাদে আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার জুমার নামাজের আগে নোয়াপাড়া ইউনিয়নের আসদ আলী মাতব্বর পাড়া এলাকায় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নিহত হন। তিনি আসদগঞ্জের শুটকি ব্যবসায়ী। এসময় সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে জাহাঙ্গীরের প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ আব্বাসও আহত হন। জাহাঙ্গীর আলম ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আবু সৈয়দ মেম্বারের ছেলে।
মুসল্লীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার সময় বেশিরভাগ মানুষ মসজিদে জুমার নামাজে ছিলেন। এসময় গুলির শব্দ শোনা যায় মসজিদ থেকে। নামাজ শেষে বের হয়ে মসজিদের কাছেই গুলি করার ঘটনা ঘটে। এসময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ দুজনকে উদ্ধার করে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলমকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এ হত্যাকান্ডে এখনো মামলা হয়নি। লাশের দাফন শেষে স্বজনরা মামলা করতে আসবেন বলে জানিয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।’