সোহেল আজিম, পেকুয়া
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামার প্রাচীনতম রূপাই খালটির দু’পাশ দশ বছর আগেই জবর দখল হয়ে গেছে। এক সময়ের খরস্রোতা খালটি ভরাট হয়ে গিয়ে গভীরতা হারিয়ে গেলে জবর দখলকারীদের কুনজর পড়ে। ৬৪ একরের খালটির বেশির ভাগ ঘরবাড়িতে রূপান্তরিত হয়েছে। আঁকাবাঁকায় ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই খালটিতে ২৫০টির মতো ঘরবাড়ি নির্মাণ করে নতুন একটি গ্রাম সৃষ্টি করা হয়েছে যার নাম দারিয়াখালী। নালার মত অগভীর একটি জলাশয়ে পরিণত হওয়া এই খালটিতে বর্তমানে ৬টি অবৈধ বাঁধও নির্মাণ করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতারা। ফলে পানি প্রবাহ-নিষ্কাশনেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খালের দক্ষিণ পূর্ব দিকে কাদির বাপের বাড়ির সামনে স্থানীয় ফরিদের ছেলে আবুল কালাম, নুরুল আজিমের ছেলে শাহজাহান, নওশামিয়ার ছেলে জয়নাল ও আমির হোছাইনের ছেলে বশর একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে মাছ ধরার জন্য প্রস্তুত করেছে।
ডা. মোকতারের বাড়ির সামনে কেন্দ্রীয় ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ও পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেননের পিএস পরিচয়দানকারী কাইছার তার ভাই ছাত্রলীগের নেতা বখতিয়ার, ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক পরিচয়দানকারী মোজাম্মেল দ্বিতীয় বাঁধটি নির্মাণ করে পানির গতিরোধ করে মাছ ধরছে।
অন্যদিকে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একই ব্যক্তিরা আরো একটি বাঁধ নির্মাণ করেছেন বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে। বাইশ্যার বর বাড়ির সামনে এজাহার মিয়ার ছেলে নুরু, নুরুল আজিমের ছেলে, সাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট এই বাঁধ নির্মাণ করেছে। ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আহমদ নবীর ছেলে তাজ উদ্দিন স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের নিয়ে একটি বাঁধ তৈরি করেছেন।মগনামা ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির জামায়াতের কয়েকশ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা গায়েবী মামলার বাদী নজরুলও একটি বাঁধ নির্মাণ করে মাছ ধরছেন। মগনামা ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি হাজী কামাল ও আওয়ামী লীগ নেতা ইউছুফের নেতৃত্বে অপর একটি বাঁধ নির্মাণ করে মাছ ধরছেন।
স্থানীয় লোকজন বলেন, এই খাল দিয়ে বর্ষা মৌসুমে পানি চলাচল ও শুষ্ক মৌসুমে লবণ মাঠে পানি সেচের মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থ জড়িত। কিন্তু দখলদারির কারণে ও একাধিক বাঁধ দিয়ে রাখায় ভারি বৃষ্টি হলে পানি নামতে না পেরে ২০ হাজার লোক কম-বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা আরো বলেন, বৃষ্টি শুরুর আগেই অবৈধ জনস্বার্থবিরোধী এই বাঁধগুলো সরিয়ে না দিলে এবং দখলকৃত অংশ উন্মুক্ত না করলে পানিবন্দি হয়ে থাকতে হবে মগনামার ২০ হাজার মানুষকে। তাঁরা সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান।