খালে পড়ে নিখোঁজ শিশুর লাশ মিললো ১৪ ঘণ্টা পর

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরের চকবাজার এলাকার হিজড়া খালে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার ১৪ ঘণ্টা সেহরিশের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে নিখোঁজের স্থান থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে চাক্তাই খালের চামড়ার গুদাম এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শিশু সেহরিশ আছদগঞ্জের শুঁটকিপট্টি এলাকার মো. শহিদ ও সালমা বেগম দম্পতির সন্তান। এর আগে গত শুক্রবার রাত সোয়া ৮টার দিকে কাপাসগোলায় শিশু সেহরিশের ফুফুর বাসায় যাওয়ার জন্য নগরের আছদগঞ্জের শুঁটকিপট্টি এলাকা থেকে রওনা দেন শিশুর মা ও দাদী। শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার পরে নগরের আধাঘণ্টার মতো বৃষ্টি হয়। এতে কাপাসগোলা নবাব হোটেল লাগোয়া হিজড়া খালে পাশের সড়কটি হাঁটু পানিতে ডুবে যায়। এজন্য তারা সিএনজিচালিত ট্যাক্সি থেকে নেমে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশাযোগে গলিতে যাওয়ার সময় রিকশাটি উল্টে হিজড়া খালে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয় ও পথচারীরা সেহরিশের মা ও দাদিকে উদ্ধার করতে পারলেও সেহরিশ পানি স্রোতে তলিয়ে যায়। শনিবার সকালে শিশুটির নিথর দেহ ভেসে উঠে।
উদ্ধারকারী যুবক মিজান জানান, খালের পাড়ে আমার মেয়ের জন্য দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ নিচে তাকাই, আবর্জনার মধ্যে প্রথমে মনে হয়েছিল পুতুল পড়ে রয়েছে। মন মানছিল না। পরে কাছে গিয়ে দেখি শিশুর মরদেহ। আধঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলাম। শরীরে কাঁপন ছুটে যায়, ভয়ে উঠে আসি। আরও মানুষকে জড়ো করি। শিশুটির হাত একটা উপরের দিকে ছিল।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণকক্ষে দায়িত্বরত কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, সকালে শিশুটির লাশ চাক্তাই খালে ভেসে ওঠে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খালের বিভিন্ন অংশে আবর্জনার স্ত‚প জমে আছে। বৃষ্টি হওয়ায় নালার পানিতে সড়ক ডুবে যায়। চালক অটোরিকশাটি ঘোরাতে গিয়ে খালে ফেলে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে দুই নারী উঠে এলেও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। খালে পানির স্রোত থাকায় শিশুটি ভেসে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে চলে যায়।
শুক্রবার রাতে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় যোগ দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরাও। রাত সোয়া ১০টার দিকে স্ক্যাভেটরের সহায়তায় উদ্ধার করা হয় খালে পড়া ব্যাটারিরিকশাটি। শিশুটির সন্ধানে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালায় ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর ডুবুরিরা। কিন্তু কোনোভাবেই শিশুটির হদিস পাওয়া যায়নি।
শিশু নিখোঁজের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বেপরোয়া গতিতে রিকশা চালানোর কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিনি শিশুটিকে যারা উদ্ধার করতে পারবে তাদেরকে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথাও জানান।