খায়রুল-আসাদুজ্জামান এখনো কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না

1

গণতন্ত্র হত্যাকারী ফ্যাসিবাদ কায়েমের মূল দোসর বিচারপতি খায়রুল হক এবং আসাদুজ্জামান এখনো কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, যাদের কারণে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারা কেন আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে? যারা বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়েছে যারা ফ্যাসিবাদকে চিরস্থায়িত্ব দান করার জন্য নিজেদের ওপর অর্পিত যে দায়িত্ব ছিল সেই দায়িত্ব শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করে গেছেন তাদের এখনো কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি? কেন জাস্টিস খায়রুল হক এখনো গ্রেপ্তার হয়নি? উনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বন্ধ করে দিয়ে স্তব্ধ করে দিয়ে শেখ হাসিনাকে এক ভয়ংকর রাক্ষসী ফ্যাসিবাদ তৈরি করার নাৎসীবাদ তৈরি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সে কেন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে? খবর বাংলানিউজের
রিজভী বলেন, কমপক্ষে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের যে আইনটি সেটি বলবৎ থাকলে একটা স্পেস হতে পারতো। কিন্তু অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বিদেশি চক্রান্ত এবং দেশের গণতন্ত্র বিরোধী চক্রান্তকারীরা সুপরিকল্পিত আঁতাতে খায়রুল হক এ কাজটি করেছিল। তিনি কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না? তিনি তো সবচেয়ে বড় দায়ী। এ যে জাহিদের হত্যাকান্ড, আবু সাঈদের যে হত্যাকান্ড এসব কিশোর তরুণ যাদের বুকের তাজা রক্ত ঝরে গেল শেখ হাসিনার র‌্যাব পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এর জন্য দায়ী তো খায়রুল হক। প্রথম এবং প্রধান দায়ী। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ কায়েম করার জন্য সুযোগ করে গেছেন তারা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদ-এর ক্যানসার আক্রান্ত ছোট ভাই মাহমুদুল্লাহ বিন জিসান-এর চিকিৎসা ও অপারেশনের জন্য আর্থিক সহায়তার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘একজন নিরীহ মানুষ যার কোনো স্বাক্ষর নেই, যার সঙ্গে কোনো কিছুর সম্পর্ক নেই জনগণের অত্যন্ত সমাদৃত জনপ্রিয় একজন নেত্রী দেশ-বিদেশে প্রশংসিত একজন নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য যিনি তার পরিবার সমস্ত সুখ শান্তিকে বিলীন করে দিয়ে দেশের মানুষ এবং মাটিকে ছেড়ে যিনি যাননি তাকে মিথ্যা মামলায় জাস্টিস আসাদুজ্জামান পাঁচ বছর সাজা দিয়ে দিলেন। তারপরে আবার হাইকোর্টে আরেকজন বিচারপতি এনায়েতুর রহিম তিনি আরও বাড়িয়ে দিলেন পাঁচ বছর। এরা কেন আজকে ধরাছোঁয়ার বাইরে? এরাই তো গণতন্ত্রের হত্যাকারী। এরাই তো ফ্যাসিবাদ কায়েমের জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছেন। আমরা যদি শহীদের রক্তকে ন্যূনতম মর্যাদা দিতে পারি এরা তো কেউ গ্রেপ্তারের বাইরে থাকার কথা নয়। তাহলে কেন আজকে এ সমস্ত ফ্যাসিবাদ কায়েমকারীরা, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ধ্বংসকারীরা এখনও বহাল তবিয়তে আছে। এরা যদি দেশে নাও থাকে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তেই থাকুক তাদের গ্রেপ্তার করা এবং ধরার দায়িত্ব হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের। সে উদ্যোগ জনগণ দেখতে চায়। সেই উদ্যোগ এদেশের মানুষ দেখতে চায়।
রিজভী বলেন, খায়রুল হক সাহেব যে অপরাধ করেছেন নিজের স্বার্থে এটাতো প্রমাণ আছে। তিনি শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করতে পারলে পুরস্কৃত হবেন; তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন; তিনি চিফ জাস্টিসের মত পদ থেকে তার চেয়ে ছোট পদে থাকার জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছেন এবং তার চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনার কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফান্ড থেকে ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন।
যারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে ধ্বংস করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনার জন্য সেই রকিবুল হুদা এখনো গ্রেপ্তার হয় না কেন- এমন প্রশ্নও রাখেন রিজভী। তিনি বলেন, সেই সিইসি কে এম নুরুল হুদা এখনও কেন গ্রেপ্তার হয় না? এরাই তো হচ্ছে গণতন্ত্র হত্যাকারী, নির্বাচন ধ্বংসকারী, এরাই হচ্ছে ভোটার বাদ দিয়ে গরু ছাগলকে দিয়ে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এ সমস্ত গণতন্ত্র বিনাশী অমানুষ দানবরা কি আজও গ্রেপ্তারের বাইরে থাকতে পারে? যারা হচ্ছে মূল অপরাধী যাদের কারণে গত ১৫-১৬ বছর শেখ হাসিনার মতো একজন রক্তপিপাসু নারী যিনি ছোট মাসুম বাচ্চাদেরকে গুলি করে হত্যা করতে দ্বিধা করেননি তাকে যারা সহযোগিতা করেছে তারা কেন আজকে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে?এটা হতে পারে না।