খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা এলাকায় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হামলায় বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুরের সহ সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনজন সাধারণ পাহাড়ি নিহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) খাগড়াছড়ি জেলা শাখা। বুধবার সকালে জেলা শহরের চেঙ্গী স্কয়ার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরে মুক্ত মঞ্চে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ মিলিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের উপদেষ্টা আব্দুল মজিদ, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি এডভোকেট আফসার রনি, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন কায়েস।
বক্তারা বলেন, ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। তারা নিরীহ বাঙালিদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে, দোকানপাটে আগুন দিচ্ছে, এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও হামলা চালাচ্ছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রæত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।সমাবেশে আরও বলা হয়, প্রশাসন যদি সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ছাত্রদের এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে জেলা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
রাঙামাটি
ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত তিনজন সাধারণ পাহাড়ি যুবক হত্যার সুবিচারের দাবিতে (২৯ অক্টোবর) বুধবার সকালে শহরের বনরূপা আলিফ মার্কেটের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখার পক্ষ থেকে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিএনপির রাঙামাটি জেলা সহ-সভাপতি কাজী জালোয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নূর হোসেন, পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, পিসিসিপি সরকারি কলেজ শাখার নেতা নয়ন বড়ুয়া প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, মিথ্যা ধর্ষণের ইস্যুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি পৌরসভা এলাকায় সা¤প্রদায়িকক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা ব্যর্থ হবার পর সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ ও এর অঙ্গসংগঠনসমূহ গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল থেকে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাধারণ জনগণকে উস্কে দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে গুইমারা-খাগড়াছড়ি রাস্তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। ঐ দিন সকাল সাড়ে দশটায় ইউপিডিএফের ক্যাডার এবং সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এলাকার বাঙালি জনগোষ্ঠীর সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াতে লিপ্ত হয়। এ পর্যায়ে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, ইট-পাটকেল, গুলতি ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালায়। এতে সেনাবাহিনীর তিন জন অফিসারসহ ১০ জন সদস্য আহত হয়।
একই সময় তারা রামগড় এলাকায় বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করে এবং বিজিবি সদস্যদের আহত করে। সংঘর্ষ চলাকালীন আনুমানিক সাড়ে এগারোটার দিকে রামসু বাজারের পশ্চিম দিকে অবস্থিত উঁচু পাহাড় থেকে ইউপিডিএফ (মূল) সশস্ত্র দলের সদস্যরা ৪/৫ বার অটোমেটিক অস্ত্র দিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত পাহাড়ি, বাঙালি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করে আনুমানিক ১০০-১৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলে সংঘর্ষে লিপ্ত এলাকাবাসীর মধ্যে অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়। এমতাবস্থায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর টহল দল দ্রুত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করার লক্ষ্যে এলাকায় গমন করে। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় উক্ত সশস্ত্র দলটি দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে।
এ সময়ে সাধারণ পাহাড়ি জনতার মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওতে স্থানীয়দের বলতে শুনা যায় ইউপিডিএফ গুলি করেছে, ইউপিডিএফ এর গুলিতেই রামসু বাজারে বিক্ষোভ রত তিনজন সাধারণ পাহাড়ি যুবক আখ্র মারমা, আথুইপ্রু মারমা ও থৈইচিং মারমা মারা যায়। ইউপিডিএফ একদিকে সাধারণ পাহাড়ি জনতাকে উস্কে দিয়ে বিক্ষোভ করায়, অন্যদিকে পাহাড়ের চূড়া থেকে গুলি করে আবার পাহাড়ি জনতাকে হত্যা করে। এ গোপন হত্যার উদ্দেশ্য ছিলো পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামকে উত্তপ্ত করে সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়ে সেনাবাহিনী ও সরকারকে দেশে বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া।
যার মূল লক্ষ্য ছিলো দেশি-বিদেশি চাপ প্রয়োগ করে তাদের স্বায়ত্তশাসনের দাবি আদায় করে নেওয়া। রাঙামাটি প্রতিনিধি











