ক্ষমা ও উদারতার অদ্বিতীয় উদাহরণ মক্কা বিজয়

2

আবু নাছের মুহাম্মদ তৈয়ব আলী

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’এর নুবুয়ত ঘোষণার পর থেকে ৮ম হিজরি পর্যন্ত ২১ বছর মুসলমানগণ ভীষণ ধৈর্য্য ও কঠিন যুগ অতিক্রম করেছিলেন। কাফিরদের অত্যাচারে অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে মু’মিনগণ আপন মাতৃভ‚মি মক্কা ত্যাগে বাধ্যহয়েছিলেন। মদীনায় হিজরত করার পরও তাঁদের অন্তরে স্বীয় জন্মভ‚মির প্রতি গভীর ভালবাসা বিদ্যমান ছিল। তাঁরাজন্মভ‚মির বিচ্ছেদ বেদনায় অস্থির ছিলেন। কালক্রমে অবস্থার পরিবর্তন হলো। মু’মিন মুসলমানগণ রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নেতৃত্বে মক্কায় এমন শান-মান নিয়ে প্রবেশ করলো যে, গোটা পরিবেশ আল্লাহ তাআলার বড়ত্বের বাণী আল্লাহু আকবারের গগণ বিদারী স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠল। তাওহীদের শক্তিতে উজ্জীবিত মুসলিম মুজাহিদগণ পবিত্র কাবাকে মুর্তি-প্রতিমার নাপাকী থেকে মুক্ত করেছেন। অহংকারীও অবাধ্য ব্যক্তিদের অহমিকা নিমেষে চুরমার হয়ে গেল। মু’মিনগণের রক্তপিপাসুরা মাথানত করে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামার সামনে করুণার আশায় ভিখারির বেশে নতজানু হয়ে দাড়িয়ে গেল। বিজয়ী বীরগণ সাফল্যের মহা বিজয়ের পতাকা হাতে বায়তুল্লাহর নিকট জড়ো হলেন। এসময় কাবা শরীফে ৩৬০টি মুর্তি স্থাপন করে রাখাহয়েছিল হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম পবিত্র মুখে উচ্চারণ করেন- ‘সত্য এসেছে মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যাতো বিলুপ্তহবারই ছিল; (আল কুরআন- সূরা : ১৭, আয়াত : ৮১) প্রিয় নবী যখনই আপন লাঠি দ্বারা কোনো মূর্তির দিকে ইশারা করতেন সাথে সাথে সেটি মুখ থুবড়ে পড়ে যেত। ভীত সন্ত্রস্ত মক্কাবাসী যারা একদা পিপাসু ছিল তাদের বলে দেয়া হলো, আজ তোমাদের নিকট থেকেকোনো বদলা নেয়া হবে না। সকল মক্কাবাসী সাধারণ ক্ষমা পেয়ে দলে দলে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে লাগলো। এটা ছিলমুসলমানদের মহা বিজয় ফতেহ মক্কা তথা মক্কা বিজয়। এ ঐতিহাসিক বিজয় সংঘটিত হয়েছিল ২০ রমজানুল মোবারক ৮ম হিজরী। মক্কাবিজয়ের শিক্ষা ক্ষমা ও উদারতা মু’মিনদের ঐতিহ্য। এ শিক্ষায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে তাওহীদ রিসালতের বাণী দিগ-দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ুক, আমিন।

লেখক : সহকারী সম্পাদক, মাসিক তরজুমান