ক্যাঙারুর দেশে পরিযায়ী বেশে

1

আমানউদ্দীন আবদুল্লাহ

(পর্ব-১)
মেলবোর্ন প্রবাসী আমাদের বড়ো মেয়ে তানিয়া বেশ কিছু দিন থেকে তাগাদা দিচ্ছে সাত বছর গত হয়ে গেছে ওরা আমাদেরকে খুব মিস করছে। এবার যেন সময় নিয়ে ওদেরকে একবার দেখে আসি। আমিও ভেবে চিন্তে দেখলাম অনেকদিন হয়ে গেলো তানিয়া তার দুই মেয়ে, এক ছেলে আর স্বামীকে নিয়ে বিদেশ বিভুইয়ে পড়ে আছে, একবার গিয়ে ওদের দেখে আসলে ভালো হয়। ইতোমধ্যে বেশ কিছু ভিসা এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে বুঝলাম অস্ট্রেলিয়ার টুরিস্ট ভিসা যোগাড় করা খুব একটা সহজ না। নিজস্ব জায়গা জমির মালিকানার প্রমাণপত্র এবং খুবই ভারী ব্যান্ক ব্যালান্স ইত্যাদি যোগাড় করে দিলে তারা সেদেশের উকিলের মাধ্যমে ভিজিট ভিসার জন্য এপ্লাই করবে। এসব কথা শুনে মেলবোর্ন যাওয়ার আশা হারিয়ে ফেলি। কিন্তু মেয়ে আমার নাছোড়বান্দা। সে ওখানকার ইমিগ্রেশন লইয়ারের সাথে যোগাযোগ করে আমাকে আশার বাণী শোনালো যার মোদ্দা কথা হচ্ছে এখান থেকে আমাকে কেবল একটা ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট পাঠালে চলবে। বাকি কাজ ও করবে। এ ভিসার নাম হচ্ছে ভিজিটর ভিসা সাবক্লস ৬০০। সোজা কথায় আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করার জন্য ভ্রমণ ভিসা যার মেয়াদ এক বছর। কথা টা শুনে মনটা খুশিতে ভরে গেল। তানিয়ার কথামতো ব্যাংক সার্টিফিকেট পাঠিয়ে আমি স্ত্রীকে নিয়ে গাট্রি বোঁচকা বাঁধা শুরু করি। সে দেশের হোম এফেয়ার্স এর নির্দেশিত পাঠানো পরিপত্র নিয়ে ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের এজেন্ট এর মাধ্যমে বায়োমেট্রিক ও ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করে চট্টগ্রামের সুন্দরবন ট্রাভেলস এর সত্বাধিকারী আলাউদ্দীন ভাইয়ের কাছ থেকে মালয়েশিয়ান এয়ার লাইন্সের টিকেট দুটো নিয়ে যখন ঘরে ফিরি তখন আমার স্ত্রী তাহেরা খুশিতে জিজ্ঞেস করে আমরা কি সত্যি অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি? আহা অনেকদিন হলো তাদের দেখিনি। আমার ছোট মেয়ে জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিক আনিকা তার ষোলো মাস বয়েসী ছেলে জোরাইজকে নিয়ে জেদ্দাতে বাস করে। স্বামী তার এরোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ার। এদিকে সফরে যাত্রার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ঘরের ফায় ফরমায়েশ এর কাজ যেন বেড়েই চলেছে। আমাদের একমাত্র ছেলে মাসুমের স্ত্রী সামানজারকে আগামী তিন মাসের ঘর তদারকির দায়িত্ব বন্টন নিয়ে আমার স্ত্রী ব্যস্ততম সময় অতিবাহিত করছে। এদিকে তানিয়া মেলবোর্ন এর বাসায় বসে দিনে অন্তত পাঁচবার ফোন করে আমাদের প্রস্তুতির খবরাখবর নিচ্ছে। ওদের যেন সময় আর ফুরচ্ছেনা।
এদিকে যাত্রার সপ্তাহ খানিক আগে ভাগিনা সুজান এসে বলে গেলো ওর মামীর যেহেতু হাঁটুর ব্যাথা আছে সেহেতু ওর জন্য যেন প্রতিটি বিমান বন্দরে হুইলচেয়ার এর জন্য আবেদন করা হয়। আমি ও ভেবে দেখলাম সুজানের পরামর্শটা মন্দনা। যাইহোক আলাউদ্দিন ভাই অনলাইনে চেষ্টা করে দেখলেন কিন্তু সফল হলেন না। তবে আমার ছেলে মাসুম চেষ্টা করে ঢাকা বিমান বন্দরের জন্য ব্যবস্থা করে ফেলে। কুয়ালালামপুর বিমান বন্দর এর জন্য পাওয়া গেলোনা। যাইহোক ফ্লাইট ডিপার্চারের একদিন পূর্বে ঢাকা পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নিই। সেই মতে সোহাগ ডবল ডেকার এসি বাসের টিকিট সংগ্রহ করি। মাসুমের মেয়ে আমাদের আদরের নাতনি আট বছরের ইয়াশরাহ অত্যন্ত গম্ভীর ভাব নিয়ে তার দাদীর আঁচল ধরে রেখেছে যাতে তাকে ফেলে দাদী চলে না যায়। বিদায় বেলায় মাসুম নিজের বিমর্ষ ভাব চাপা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছিলো। তবুও ব্যাপারটাকে সহজ ভাবে নিয়ে আমাদেরকে সালাম জানিয়ে ওর মাকে সাথে নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়ে। এদিকে সোহাগ কাউন্টারে এসে দেখি আমার বেয়াই এডভোকেট হেনা সাহেবের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাঁশখালী বাগমারা ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান জনাব শাহজাহান সাহেব আমাদেরকে বিদায় জানাতে এসে উপস্থিত হয়েছেন। উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে জানালেন ঢাকা মালিবাগ সোহাগ কাউন্টারে আমাদের জন্য গাড়ি অপেক্ষা করবে এবং সেই গাড়ি পরদিন বিমান ছাড়ার আগে পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকবে। একথা শুনে এই মহান পুরুষের জন্য মনটা ভালবাসায় পরিপূর্ণ হয়ে গেলো।
ঢাকা পৌঁছে চেয়ারম্যান সাহেবের পাঠানো গাড়িতে চেপে মহাখালীতে অবস্থিত আমার শ্রদ্ধেয় মরহুম শ্বশুরের মেহমান খানার গেটে এসে পৌঁছলে ওখানকার তত্ত¡াবধায়ক আবদুল মিয়া আমাদের স্বাগত জানান। পরদিন যথারীতি বিমান বন্দরে পৌঁছে চেয়ারম্যান সাহেবের প্রেরিত ড্রাইভারকে কিছু বখশিশ দিয়ে ট্রলিতে লাগেজ দুটো চাপিয়ে ঢুকে পড়ি। এখানে পৌঁছেই খেয়াল করি বিমান বন্দরের এক মহিলা সেবিকা হুইলচেয়ার নিয়ে আমাদের আশেপাশে ঘুরাঘুরি করছে। পরে জানলাম সে আমার স্ত্রীর জন্যই সকাল থেকে অপেক্ষা করছে। এরপর ই শুরু হলো হুইলচেয়ারের কারিশমা। আমাদেরকে নিয়ে সে যাত্রীদের বিরাট লাইনকে পাশ কাটিয়ে প্রায়োরিটি কাউন্টারে গিয়ে দাঁড়ায়। কি আশ্চর্য! কাউন্টারে দাঁড়ানো অফিসার ঝটপট আমাদের লাগেজ ওজন দিয়ে ওকে করে দেন। এখানে বলে রাখা ভালো মাসুম আগে ভাগে অনলাইনে ঢাকা থেকে মেলবোর্ন পর্যন্ত আমাদের বোর্ডিং কার্ড কর্নফার্ম করে রাখাতে কোন রকম ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। তবে কাউন্টারে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছি। আমাদের অগ্রবর্তী যাত্রী মহিলাটি তাদের দুজনের ঢাউস সাইজের লাগেজ দুটো মেসিনে দিলে দেখা গেলো ওজন হয়েছে প্রায় চুয়াত্তর কেজি। এয়ারলাইন্স এর প্রথানুযায়ী প্রতি যাত্রী ২০ কেজি পর্যন্ত ওজনের লাগেজ নেয়ার অনুমতি আছে। এর বেশি হলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। কিন্তু এর মধ্যে একজন অফিসার এসে কাউন্টারে কর্মরত ব্যক্তিকে কানে কানে কিছু বলে যান। যার ফলে ঐ ভদ্রমহিলা অনায়াসে তার লাগেজ দুটো কোন অতিরিক্ত টাকা ছাড়াই জমা করে দেন। ব্যাপারটা লাইনে দাঁড়ানো অন্যান্য যাত্রীদের চোখ এড়িয়ে যায়নি । এর পর হুইলচেয়ার চালানো সেবিকা আমাদেরকে নিয়ে অনায়াসে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে ইবিএল এর স্কাই লাউঞ্জে এসে পৌঁছে।
ইবিএল এর কার্ড উপস্থিত কর্মকর্তাকে দেখিয়ে আমরা ঢুকে পড়ি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এয়ারলাইনের যাত্রার সময় ঘোষণা হতে থাকলে নিজ নিজ গন্তব্যের যাত্রী গণ লাউঞ্জ ত্যাগ করতে থাকে। বিদেশ যাত্রীদের জন্য স্থাপিত ইস্টার্ন ব্যাঙ্ক পিএলসির স্কাই লাউঞ্জের বুফে টেবিল খানা নানান পদের মুখরোচক খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সাজানো হয়েছে। নরম গদী আঁটা সোফাতে গা এলিয়ে দিয়ে কেউ কেউ হালকা ঘুম দেয়ার চেষ্টা করছে। আবার কেউবা প্লেটে নিজ নিজ পছন্দের খাবার তুলে নিচ্ছে। ইতোমধ্যে তাহেরার হুইলচেয়ার বহনকারী সেবি এসে হাজির। সে আমাদেরকে নিয়ে সবার আগে ভাগে বিমানের গেট পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আমি হুইলচেয়ার এর এই কেরামতি দেখে মনে মনে মুগ্ধ হয়ে যাই। কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে হুইলচেয়ার এর জন্য আবেদন করা হয়েছে কিন্তু কন্ফারমেশন এখনো এসে পৌঁছেনি। যাক সেবিকার হাতে কিছু বকশিস দিয়ে আমরা বিমানে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করি।
কুয়ালালামপুর গামী মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনস এর বিমান টি টেক্সি ওয়েতে গিয়ে থেমে পড়ে। জানলা দিয়ে লক্ষ্য করলাম আমাদের বিমানের আগে পিছে বেশ কিছু বিমান রান ওয়েতে যাওয়ার জন্য অপেক্ষমান। এতে বুঝা গেলো ঢাকা বিমান বন্দরে আরো রানওয়ে প্রয়োজন। ইতোমধ্যে পর পর দুটি বিমান অবতরণের পর রানওয়ে খালি হলে আমাদের যাওয়ার অনুমতি মেলে।
এ ভ্রমণ টা খুব আরামদায়ক ছিলো। মানে আবহাওয়া ভালো থাকার কারণে ঝাঁকি ছিলোনা। তাছাড়া আমার শ্রদ্ধা ভাজন ক্যাপটেন আবদুল্লাহর সাহসী পরামর্শের কারণে বুঝতে পেরেছি পরিস্কার আবহাওয়াতে ও জেট স্ট্রিমের কারণে হালকা ঝাঁকুনি হতে পারে এতে ভয়ের কিছু নেই। যাই হোক কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে এসে আর হুইলচেয়ার এর দেখা পাইনি। ওরা নাকি আবেদন পেয়েছে অনেক দেরীতে, ফলে তড়িঘড়ি করে তার ব্যবস্থা করা যায়নি। এখানে তিন ঘন্টা ট্রানজিট থাকার কারণে টার্মিনালের ভিতরে বেশ কিছুটা ঘুরাঘুরি করে, ওয়াই ফাই জোনে গিয়ে আত্মীয় স্বজনদের সাথে ফ্রি তে কথা বার্তা বলতে পেরেছি। অতপর হাঁটা হাঁটির এক পর্যায়ে যথাসময়ে মেলবোর্নগামী উড়ো জাহাজের গেটের বাইরের লবিতে এসে পৌঁছি। এখান থেকে রাত সাড়ে দশটায় শুরু হলো প্রায় আট ঘন্টার উড়ে চলা। সময়টা ঘুমিয়ে কাটানোর জন্য বুদ্ধি করে টেবলেট খেয়ে চোখ দুটো বন্ধ করেছিলাম কিন্তু বিধি বাম। ঘুম মোটেও আসেনি।
বিমানের জানলা দিয়ে রাতের তারা গুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগছিলো। রাব্বুল আলামিনের অপূর্ব সৃষ্টি এই ফুটফুটে আলো বিকিরণকারী তারকারাজী দেখে তাঁর মহানুভবতার প্রশংসা করতে গিয়ে বার বার চোখের পাতা ভিজে যাচ্ছিলো। অস্ট্রেলিয়ার সময় বাংলাদেশ থেকে পাঁচ ঘন্টা এগিয়ে থাকার কারণে কিছুক্ষণের মধ্যেই সূর্যের আলোর দেখা পেলাম। কেবিন ক্রুরা ইতোমধ্যে সকালের চা-নাস্তা পরিবেশনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অনেকেই ঘুম ঘুম চোখে হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপে ঠোঁট ছোয়াচ্ছিলো। আট ঘন্টার এই সফরে আমরা মোটেও ঘুমাতে পারিনি। অতপর সকাল নয়টার পরে বিমান মাটিতে নেমে এলে কি এক অজানা খুশিতে মনটা ভরে যায়। ইমিগ্রেশনে প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে অফিসারকে স্মিত হেসে হেলো বলে পাসপোর্ট টি এগিয়ে দিই। কিন্তু তিনি আমাকে অবাক করে দিয়ে পাসপোর্টগুলো নড়াচড়া করে মেসিনে আলোর সামনে কিছু ক্ষণ ধরে রেখে মুচকি হাসি হেসে আমার হাতে ফিরিয়ে দিলে আমি কাউন্টার ত্যাগ করি। অগত্যা আমার হাতে রাখা ভিসার কাগজ পত্র যথারীতি ছোট ব্যাগের ভিতর রেখে দিই। আমার কেন জানি মনে হয়েছে আমাদের পাসপোর্ট দুটো মেসিনে দেয়ার সাথে সাথে ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উনি অবগত হয়েছেন। যার ফলে অহেতুক সময় নষ্ট না করে সন্তুষ্ট চিত্তে বিদায় দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আমরা লাগেজ সংগ্রহ করে ট্রলি নিয়ে কাস্টমস এর টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলে কর্মরত মহিলা অফিসার কোন প্রশ্ন বা চেক না করে সসম্মানে বাইরে যাওয়ার পথ দেখিয়ে দিলে আমি বিস্মিত হয়ে যাই।
লাগেজ এর ট্রলি নিয়ে বেরুতেই তানিয়া ওর স্বামী শহিদুল্লাহ এবং তাদের বারো বছর বয়সী ছেলে আরিজকে দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়ি। তানিয়া দৌঁড়ে এসে ওর মাকে জড়িয়ে ধরে সেকি কান্না। এটা অবশ্য খুশির কান্না। আমি নিজেকে সংযত করে ওদের কে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে কুশলাদি জিজ্ঞেস করি। আরিজের হাত থেকে ফুলের বুকে টি নিয়ে ওকে হাত বুলিয়ে আদর করি।
এবার আমাদের গন্তব্যে ফেরার পালা। পার্কিংলটে গিয়ে শহিদুল্লাহ ওদের জিপ গাড়িটি নিয়ে এলে গাড়িতে উঠে ওদের বাসার পথে রওয়ানা দিই। মেলবোর্ন এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে এম-২ হাইওয়ে ধরে গাড়ি খানা ছুটতে থাকে প্রায় ষাট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ক্র্যানবোর্ন নামে খ্যাত শহরতলীর পথে। কিছু দূর পর পর গতি নির্ধারণি সংকেত দেখা যাচ্ছে যেখানে স্পষ্ট লেখা রয়েছে ১০০। তার মানে একশো কিলোমিটারের নিচে গাড়ির গতি নামানো যাবেনা। আশেপাশের গাড়িগুলো সংকেত লক্ষ্য করে নিজ এক্সিট দিয়ে হাইওয়ে থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। কি সুন্দর ব্যবস্থা! কোন সিগনাল নাই, হরন নাই, ওভার টেক নাই। চার লাইন করে দুদিকে আট লাইনের মহাসড়ক। তার দুপাশে দেয়ালের বেস্টনি। ফলে বাইরে থেকে কোন জীবজন্তু বা অন্য কোন যানবাহনের ঢুকে পড়ার সম্ভাবনাও নাই। শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে চলা। ইতোমধ্যে শহিদুল্লাহ গাড়ির গতি কমিয়ে এক্সিট দিয়ে বেরিয়ে ডেনডেনং নামে ছোট এক শহরের ভিতর ঢুকে পড়ে। অতপর তাদের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের সামনে এসে নেমে পড়ে। ওকে দোকান খুলতে হবে তাই তার এখন বাসায় যাওয়া হবেনা। এবার তানিয়া গাড়ির হাল ধরে। আমার মেয়ে এত নিখুঁত ভাবে গাড়ি চালাতে পারে তা আমার ধারণার বাইরে ছিলো। অবশ্য প্রবাস জীবন এটা অনিবার্য। এখান থেকে আরো কিছুক্ষণ চলার পর আমরা ওদের বাসার সামনে এসে পৌঁছি। গাড়ি থেকে নেমেই অজানা অচেনা দৃশ্যাবলী দেখে ভাবতে থাকি শেষ পর্যন্ত পরিযায়ী কোনো ক্যাঙ্গারুর দেশে এসে পৌঁছেছি। এবার ক্যাঙ্গারুরু দেখা পেলেই হয়। চলমান –
লেখক : প্রাবন্ধিক