‘ক্বদর’ রজনীর মর্যাদা, বৈশিষ্ট্য ও ফযীলত

1

সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আযহারী

বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বরকতময় রাত হলো শবে ক্বদর। হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ এক অনুপম ও তুলনাহীন রাত। এ রাতেই সর্ব প্রথম পবিত্র মক্কা মুকাররমার হেরা গুহায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে রাহমতুল্লিল আলামীন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি নাযিল হয়েছে কুরআনুল করীম। এ রাতে পরবর্তী এক বছরের জন্য মানুষের হায়াত, মউত, রিজিক, ধন-দৌলত ইত্যাদির বরাদ্দ দেয়া হয় এবং মানুয়ের ভাগ্য চূড়ান্ত করা হয়। যে রাতের সূর্যাস্তের পরপরই আল্লাহ তাআলা পৃথিবীবাসীর প্রতি বিশেষ করুণা ও রহমতের নযর দান করেন এবং বান্দাদের উদ্দেশে ডেকে ডেকে বলতে থাকেন; কে আছ পাপী ক্ষমা চাও, আমি ক্ষমা করে দেব, কে আছ দুঃখী আমি দুঃখ মোচন করে দেব, কে আছ রোগী আমি সুস্থ করে দেব, কে আছ দায়গ্রস্ত আমি দায়মুক্ত করে দেব, কার রিজিকের প্রয়োজন আমি রিজিক বাড়িয়ে দেব। এভাবে ঘোষনা আসতে থাকে সকাল পর্যন্ত।
এ রাতে ফেরেশতাদের সর্দার হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম ফেরেশতাদের এক বিরাট বহর নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন এবং ঈমানদারদের মধ্যে কল্যাণ ও প্রাচুর্য বিতরণ করেন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, যখন লায়লাতুল কদর আসে, তখন জিবরাঈল অন্যান্য ফেরেশতাগণের সাথে যমীনে নেমে আসেন এবং প্রত্যেক ঐ বান্দার জন্যে রহমত ও মাগফেরাতের দোয়া করেন; যে দাঁড়িয়ে- বসে আল্লাহর ইবাদাতে মশগুল থাকে। (বায়হাকী: ফাদায়েলুল আওকাত-১৪৬)
হযরত আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘গুনিয়াতুত¦ ত্বালেবীন’ এ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ করেন, আল্লাহ তাআলা লাইলাতুল কদরে হযরত জিবরাঈলকে সিদরাতুল মুনতাহার সত্তর হাজার ফেরেশতা নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করার নির্দেশ দেন। তিনি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী ফেরেশতাদের দলসহকারে নূরের পতাকা নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন এবং পতাকাগুলো পৃথিবীর চারটি জায়গায় উত্তোলন করে দেন। ১. কাবা শরিফে ২. বায়তুল মোকাদ্দাসে ৩. মসজিদে নববীতে ৪. তুরে সিনায়। তারপর ফেরেশতাগণ সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েন। তাঁরা ইবাদতকারী প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর ঘরে প্রবেশ করেন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে যে সব ঘরে কুকুর, শুকর, মদ্যপায়ী, ব্যভিচারী ও সুদখোর থাকে সে ঘরে তাঁরা প্রবেশ করেন না।
লাইলাতুল ক্বদর প্রিয় নবীর ওসীলায় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এ উম্মতের জন্য বিশেষ উপহার : লাইলাতুল ক্বদর আমাদের প্রিয় নবীর ওসীলায় আমাদের জন্য এক মহান উপহার ও নেয়ামত। ইমাম মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ‘মুয়াত্তা’ শরীফে বর্ণনা করেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট পূর্বেকার উম্মতদের বয়স পেশ করা হলে তিনি তাদের অনেক দীর্ঘ হায়াত দেখে মন খারাপ করেন, কারণ সে তুলনায় এ উম্মতের বয়স অনেক কম। সুতরাং এ উম্মতের আমলের পরিমাণ এ হায়াতের ব্যবধানে পূর্বেকার উম্মতের আমলের পরিমাণের সমান হবে না। তখন আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় হবীবকে খুশী করার জন্য ‘সূরা ক্বদর’ নাযিল করেন এবং ‘লাইলাতুল ক্বদর’ দান করেন।
নামকরণ : আরবীতে ‘লাইলাতুল ক্বদর’। ফারসী, উর্দু, হিন্দী ও বাংলাতে শবে ক্বদর হিসাবে খ্যাত। আরবীতে ‘লাইলাহ’ এবং ফারসীতে ‘শব’ শব্দের মানে হল রাত। কিন্তু ‘ক্বদর’ শব্দের মানে বিভিন্ন হতে পারে। যেমন- সম্মানিত, মর্যাদাপূর্ণ, মহিমান্বিত, সম্ভাবনাময়, ভাগ্যনির্ধারণী রজনী ইত্যাদি। আর সে জন্যই এর নামকরণের কারণও বিভিন্ন। যেমন : –
১। ক্বদর মানে তকদীর: লাইলাতুল ক্বদর মানে তকদীরের রাত বা ভাগ্য-রজনী। যেহেতু এই রাতে মহান আল্লাহ আগামী এক বছরের জন্য সৃষ্টির হায়াত, মাওত, রিযক ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করে থাকেন। তাই এ অর্থে ক্বদরের অর্থ দাঁড়ায়- নির্ধারণ করা, সময় নির্দিষ্ট করা ও সিদ্ধান্ত করা। অর্থাৎ লায়লাতুল ক্বদর এমন এক রাত যে রাতে আল্লাহ প্রত্যেক বস্তুর সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করেন। তার সময় নির্দিষ্ট করেন এবং হুকুম নাযিল করেন ও প্রত্যেক বস্তুর ভাগ্য নির্ধারণ করেন। মহান আল্লাহ এরশাদ করেন, “ঐ রাতে সকল বিষয়ের সুষ্ঠু ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয় আমার নির্দেশক্রমে” (সূরা দুখান, আয়াত-৪)
২। ক্বদরের আর একটি অর্থ হল- শান-মান, কদর-মর্যাদা, মহিমা-মাহাত্ম্য ইত্যাদি। অতএব, এ অর্থে শবে ক্বদরের অর্থ হবে মহিমান্বিত রজনী।
৩। ক্বদরের আরেক অর্থ হল সংকীর্ণ হওয়া। এ রাতে আসমান থেকে যমীনে এত বেশী সংখ্যক ফিরিশ্তা অবতরণ করেন যে, পৃথিবীতে তাঁদের জায়গা হয় না। বরং তাঁদের জন্য পৃথিবী সংকীর্ণ হয়ে যায়।
লাইলাতুল ক্বদর অনুসন্ধান : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, তোমরা শবে ক্বদর তালাশ কর। রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলোতে। (বুখারী-২০১৭)
সাহাবীদের মধ্যে অনেককেই স্বপ্ন দেখানো হল যে, শবে ক্বদর (রামাযানের) শেষ সাত রাতের মধ্যে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: “আমি দেখছি, তোমাদের সবার স্বপ্ন একই রকম তথা শেষ সাত রাতেই সীমাবদ্ধ। তাই যে তা অনুসন্ধান করে, সে যেন শেষ ৭ (সাত) রাতে তা খোঁজ করে দেখে। (বুখারী-২০১৫ ও মুসলিম-১১৬৫)
তিনি আরও এরশাদ করেন: “তোমরা তালাশ করবে তাকে রামাযানের শেষ দশে- মাসের নয় দিন বাকি থাকতে, সাত দিন বাকি থাকতে, পাঁচ দিন বাকি থাকতে। (বুখারী-৩৫০৫)
উল্লেখিত হাদীসগুলো থেকে জানা যায় যে, শবে ক্বদর রামাযান মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে কোনো একটিতে অর্থাৎ ২১শে, ২৩শে, ২৫শে, ২৭শে অথবা ২৯শে রাতে।
অধিকতর সম্ভাবনাময় রাত : তবে অধিকতর সম্ভাবনার দিক দিয়ে রামাযান মাসের সাতাশ তারিখ শবে ক্বদর। যা ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহিসহ অসংখ্য ইমামদের মত। তবে সুন্নত হলো পবিত্র রামাযানের শেষ দশকের প্রত্যেক বেজোড় রাতেই শবে ক্বদর তালাশ করা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ রাতকে গোপন রেখেছেন আমাদের উপর রহম করে। তিনি দেখতে চান এ রাতের বরকত ও ফযীলত লাভের জন্য কে কত প্রচেষ্টা চালায়। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: “যে তার খোঁজে রাত জেগে ইবাদত করল এবং সে তা পেয়েও গেল, তাহলে তার পূর্বেকার গোনাহসমূহ মাফ হয়ে গেল।’’(আহমদ: মুসনাদ ৫/৩১৮, হা- ২২৬১২) তিনি আরও এরশাদ করেন:, “যে ব্যক্তি শবে কদরে রাত জেগে ইবাদত করবে এবং সে তা ঈমান ও নেকীর আশা রাখার সাথে পেয়েও যাবে, তার গোনাহসমূহ মাফ হয়ে যাবে।” (মুসলিম, হা- ৭৬০)

এ রাতটি কেন গোপন রাখা হল ?
কিছু কিছু এমন বিষয় আছে যা গোপন রাখার মধ্যে রয়েছে আমাদের জন্য অনেক কল্যাণ। যেমন- জুমার দিনের যে সময়টিতে দোয়া কবুল হয় তা সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি, যেন বান্দারা জুমার দিন পুরো সময় ইবাদতের জন্য সচেষ্ট হয়। অনুরূপভাবে, কার মৃত্যু কখন হবে তা জানিয়ে দেয়া হয়নি, যেন বন্দা সর্বদা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকে। কার আমল কবুল হয়েছে এবং কার কবুল হয়নি তাও জানিয়ে দেয়া হয়না, যেন বন্দা সর্বদা আমলে রত থাকে। একইভাবে এই রাতটি গোপন রাখার পেছনেও লুকায়িত রয়েছে অনেক রহস্য। এর মধ্যে অন্যতম হল, মুসলমানদেরকে রমযানের শেষ দশকের সবগুলো রাতে ‘ইবাদত-বন্দেগী, দোয়া ও যিকিরের উপর সক্রিয় রাখা। কদরের রাত নির্ধারিত করে দিলে অনেক মানুষ এমন হতো যে, শুধু ওই রাতেই ইবাদত করত, অন্য রাতে এবাদতের প্রতি অতটা গুরুত্ব দিত না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ জন্য অস্পষ্ট রেখেছেন, যাতে রমযানের শেষ দশকে মুসলমানরা পুরোদমে ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত থাকে। (ফাত্হুল বারী: ৪/২৬৬)
মোটকথা, এটা আল্লাহ তাআলার হেকমত যে, এত দামি ও গুরুত্বপূর্ণ একটি নিয়ামত যদি বিনা পরিশ্রমে হাতের নাগালে রেখে দিতেন, তাহলে হয়তো এর যথাযথ মূল্যায়ন হতো না। এ জন্য বলেছেন যে, এ নিয়ামত অর্জনের জন্য সাধনা কোরো। আল্লাহর কাছে এই সাধনা অনেক প্রিয়। তাই আমাদের কর্তব্য হলো, রমযানের শেষ দশকে আল্লাহর ইবাদতে নিজেকে মশগুল রাখা।
রামাযানের শেষ দশকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইবাদত : উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: “রামাযানের শেষ দশক প্রবেশ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোমর বেঁধে নিতেন। নিজে সারা রাত জাগতেন এবং পরিবারের সদস্যদেরকেও জাগাতেন।” (কোমর বাঁধার অর্থ হল পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে চেষ্টা-সাধনায় লিপ্ত হওয়া।) (বুখারী-২০২৪, মুসলিম-১১৭৪)
তিনি আরও বলেন: “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাযানের শেষ দশকে (ইবাদত-বন্দেগীতে) যে পরিমাণ পরিশ্রম করতেন অন্য কোন সময় এভাবে করতেন না।” (মুসলিম-১১৭৫)
লাইলাতুল ক্বদরের মর্যাদা এত বেশি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতটির প্রতি উম্মতদেরকে উৎসাহ প্রদানের জন্য শেষ দশকে আজীবন ইতেকাফ করেছেন। (বুখারী-২০২৫, মুসলিম-১১৭১) তিনি এরশাদ করেন, তোমরা রামাযানের শেষ দশ রাতে শবে ক্বদর সন্ধান কর। (বুখারী-২০১৭ ও মুসলিম-১১৭১)
লাইলাতুল ক্বদরের ফযীলত ও মর্যাদা : এ রাতের রয়েছে বিশাল মর্যাদা ও মাহাত্ম্য। মহান আল্লাহ এই রাতে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন এবং এ রাতের মাহাত্ম্য ও ফযীলত বর্ণনা করার জন্য কুরআন মাজীদের ‘সূরাতুল ক্বদর’ নামে পূর্ণ একটি সূরা অবতীর্ণ করেছেন এবং সেই সূরার নামকরণও হয়েছে তারই নামে। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন এরশাদ ফরমান: (১) নিশ্চয়ই আমি একে (পবিত্র কুরআনকে) নাযিল করেছি শবে ক্বদরে। (২) শবে ক্বদর সম্বন্ধে আপনি কি জানেন? (৩) শবে ক্বদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। (৪) এই রাত্রিতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। (৫) এটা নিরাপত্তা যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। (সুরা ক্বদর)
এক হাজার মাস সমান ৩০ হাজার রাত্রি। অর্থাৎ এই রাতের মর্যাদা ৩০,০০০ গুণ অপেক্ষাও বেশী! সুতরাং বলা যায় যে, এই রাতের ১টি তসবীহ অন্যান্য রাতের ৩০,০০০ তসবীহ অপেক্ষা উত্তম। অনুরূপ এই রাতের ১ রাকআত নামায অন্যান্য রাতের ৩০,০০০ রাকআত অপেক্ষা উত্তম।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে ক্বদরের রাতে ইবাদত করে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।” (বুখারী-৩৫ ও মুসলিম-৭৬০)
তিনি আরও এরশাদ করেন : লোক সকল! তোমাদের মধ্যে এমন এক রাত এসেছে যা হাজার মাস থেকেও উত্তম। যে ব্যক্তি এ রাত থেকে বঞ্চিত রইলো সে সকল প্রকার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল এবং এ রাত থেকে সে-ই বঞ্চিত থাকে যে প্রকৃতপক্ষে হতভাগা-বঞ্চিত। (ইবনে মাজাহ-১৬৩৪)
ক্বদর রাতের দু’আ : আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা বলেন: আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যদি ক্বদরের রাত খুঁজে পাই, তাহলে আমি ওই রাতে কী দুআ করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি বলবে, “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুভ্ভুন তুহিব্বুল আফ্ওয়া ফা’ফু আন্নী” অর্থ: হে আল্লাহ তুমি অবশ্যই ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা পছন্দ কর, তাই আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তিরমিযী-৩৫১৩, ইবনু মাজা-৩১১৯)
শবে ক্বদর দু‘আ কবুলের অন্যতম রাত্রি। এই রাত্রিতে বান্দা আল্লাহর কাছে যা আরজি করে আল্লাহ পাক তাকে তা দিয়ে থাকেন প্রয়োজন অনুসারে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন: “তোমরা আমার নিকট দু’আ করো আমি তোমাদের দু’আ কবুল করবো।” (সূরা গাফের, আয়াত-৬০)
তাই প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, রামাযানের শেষ দশ দিনের প্রতি বেজোড় রাত্রিগুলোতে জাগ্রত থেকে লাইলাতুল ক্বদর বা শবে ক্বদর তালাশ করা। রাত্রিতে জাগ্রত থেকে বেশি বেশি তওবা ইস্তিগফার ও ইবাদত-বন্দেগীতে কাটানো এবং যার মনে যতো আরজি রয়েছে তা আল্লাহর দরবারে পেশ করা। কেননা “যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট চায় না বা দু’আ করে না আল্লাহ পাক তার উপর অসন্তুষ্ট হন।” (তিরমিযী-৩২৯৫)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় খতীব, মুসাফিরখানা জামে মসজিদ