নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিদেশ থেকে আসা সবাইকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভা দেওয়ার পর বন্দর নগরীকে কোয়ারেন্টিন হিসেবে চট্টগ্রামে জেনারেল হাসপাতাল ও রেলওয়ে হাসপাতালকে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ খবর নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন। খবর বিডিনিউজের
তিনি বলেন, “এরকম সিদ্ধান্তের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। পরিস্থিতির সবসময়ের খবর রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“আপাতত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও রেলওয়ে হাসপাতালকে কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর আইসোলেশনের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ও বিআইটিআইডিতে ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
তবে এর আগে কোয়ারেন্টিনের জন্য নগরীর স্টেশন রোডে মোটেল সৈকতকে নির্ধারণ করা হলেও পর্যটন করপোরেশন পরিচালিত মোটেলটির কর্তৃপক্ষ এতে আপত্তি জানায়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “মোটেল সৈকত কর্তৃপক্ষ বলছে, সেখানে কোয়ারেন্টিন করা হলে তাদের কোনো গ্রাহক আসবে না। ফলে তারা কর্মচারীর বেতনও দিতে পারবেন না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, “যদি সেরকম পরিস্থিতি হয়, তখন আমাদের যে স্থানই প্রয়োজন, সবই ব্যবহার করা হবে। তখন কারও আপত্তি দেখা হবে না।”
এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টায় জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, জেনারেল হাসপাতালে মোট ১০০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
“বিআইটিআইডিতে আইসোলেশনের জন্য ৫০টি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০টি, রেলওয়ে হাসপাতালে ৩৭টি, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল এবং সিটি করপোরেশন পরিচালিত কয়েকটি হাসপাতালসহ নগরীতে মোট ৩৫০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিস (বিআইটিআইডি) নগরীর বাইরে সীতাকুন্ড উপজেলার ফৌজদারহাটে অবস্থিত।
নগরীর বাইরে উপজেলাগুলোর মধ্যে রাউজানে ৩০টি এবং হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, আনোয়ারা, সীতাকুন্ড ও বোয়ালখালী উপজেলায় ১০টি করে বেড প্রস্তুত রাখার কথা জানান সিভিল সার্জন। পাশাপাশি জেলার ১৪টি উপজেলার মধ্যে বাকি আটটিতে পাঁচটি করে বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রামে বিমানবন্দর ও সমুদ্র বন্দরের কারণে ঝুঁকি খুব বেশি বলেও জানান সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি।
চট্টগ্রামে চালু তিনটি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় কয়েকশ কারখানা, নির্মাণাধীন একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল, কর্ণফুলী টানেলসহ বেশকিছু প্রকল্পে বিদেশি নাগরিকরা কর্মরত। পাশাপাশি চট্টগ্রামে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ প্রবাসী নাগরিকের সংখ্যাও দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে বেশি। এছাড়া পাশের দেশ ভারতে চিকিৎসা নিতে প্রতিবছর কয়েক লাখ চট্টগ্রামের বাসিন্দা দেশটি ভ্রমণ করেন।