কোনও অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের সুযোগ দেব না

11

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অন্তর্বর্তী সরকার কোনও ধরনের সাম্প্রদায়িক শক্তির পক্ষপাতিত্ব করে না বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর-মন্দিরে হামলা এবং মাদ্রাসা-মসজিদ দখলে নেওয়ার অপচেষ্টার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন ২০ জেলার ২৩ জায়গায় এ রকম আক্রমণ হয়েছে। যারা উপাসনালয়ে হামলা করে বা আমাদের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ভাইদের ঘর আক্রান্ত হয়েছে। যারা এসব করেছে তাদেরকে আমরা ক্রিমিনাল মনে করি এবং দেশের প্রচলিত আইনে অবশ্যই তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। আরেকটা কথা বলি, যতটুকু বলা হচ্ছে ততটা বাস্তবে ঘটেনি।বিবিসি একটা রিপোর্ট করেছে, একটা বিশেষ মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এই ইস্যুটাকে চাঙ্গা করছে। একটা প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত সচেতন রয়েছি।
বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জায়গা বর্ণনা করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-মুসলমানরা আমরা একই আইনের অধীনে পরিচালিত হই। আমার যেমন অধিকার আছে, একজন হিন্দু কিংবা বৌদ্ধ ভাইয়েরও সেই অধিকার আছে। আমরা অধিকারটা এক্সারসাইজ করতে চাই। আমরা কোনও অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়, এমন সুযোগ দেব না। আমার মন্ত্রণালয় আপনাদের সাথে আছে। আমি আজকেও সার্কিট হাউজে হিন্দু ভাইদের সাথে কথা বলেছি। আমরা তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছি, কোনও ধরনের ডিসক্রিমিনেশন হবে না। নাগরিক অধিকার প্রত্যেকে সমানভাবে ভোগ করবে। আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, যারা আহত হয়েছে তাদের খরচ সরকার বহন করবে। তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সরকার সবসময় তাদের পাশে আছে। আমি বিভিন্ন এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকেও আহবান জানাব যেন তারা আহতদের পাশে এসে দাঁড়ায়। কারও যদি দেশের বাইরে নিয়ে গিয়েও চিকিৎসা করার প্রয়োজন হয় তার ব্যবস্থাও সরকার করবে। বেসরকারি হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন আছে তাদের চিকিৎসা ব্যয়ও সরকার বহন করবে।
ধর্ম উপদেষ্টার সাথে এসময় অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন, আস-সুন্নাহ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান শায়খ আহমদুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ ও সহ-সমন্বয়ক তানভীর আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।