নিজের সাবেক একান্ত সহকারী-এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে করা সংবাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে ‘সন্দেহ প্রকাশ করলেও’ অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তা তদন্তের অনুরোধ করেছেন বলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘ইতোমধ্যে দুদক তদন্ত শুরু করেছে। যদি কিছু থেকে থাকে সামনে আসবে, যদি নিছক গুজব হয় সেটাও সামনে আসবে’।
গতকাল শনিবার পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) নিয়োগ পরীক্ষা পরিদর্শনে আগারগাঁওয়ে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে যান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ। সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন উপদেষ্টা। খবর বিডিনিউজের
কয়েকদিন আগে সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মোয়াজ্জেমের দাবি, তিনিই অব্যাহতির জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে আগে থেকেই তার বিভিন্ন ‘অনিয়মের’ গুঞ্জনের মধ্যে থাকা মোয়াজ্জেমকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তখন কয়েকটি সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমার সাবেক এপিএসকে নিয়ে অনেকগুলো কথা চলমান আছে। একটা নিউজ হয়েছিল যে, তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার প্রেক্ষিতে সেটা হয়েছিল’।
মোয়াজ্জেমকে নিয়ে ‘একটি বিশেষ শক্তিশালী মহলের চাপে’ সংবাদমাধ্যম ‘সূত্রবিহীন’ খবর প্রকাশ করে বলে দাবি করেন উপদেষ্টা। বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নিতে তথ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করার কথাও বলেন তিনি।
আসিফ বলেন, ‘৩০০ কোটি টাকার একটা নিউজ হয়েছে। এই নিউজটা কতটুকু ক্রেডিবল, সেটা আপনারা একটু দেখবেন। সেখানে কোনো সোর্স নেই, ব্যক্তি সাক্ষ্য নেই। সেখানে ‘জানা গেছে’ বলা আছে অন্তত সাতবার’।
সেই প্রতিবেদন লেখা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যখন কথা বলেছি, তখন বলা হয়েছে বহিরাগত কোনো জায়গা থেকে লেখাটা দিয়ে চাপ দেওয়া হয়েছে প্রচার করার জন্য। সেই জায়গা থেকে অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য দুদককে অনুরোধ করেছি তদন্ত করতে। ইতোমধ্যে দুদক তদন্ত শুরু করেছে। আপনারা জানেন, কোথায় থেকে হাউজগুলোতে চাপ দেওয়া হয়। আগেকার সময় বিভিন্ন সংস্থা হাউজগুলোতে চাপ দিয়ে এক ধরনের নিউজ করাত। এখন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ দেওয়া হয় না। এখনও অনেকগুলো পাওয়ার হাউজ রয়ে গেছে, যেখান থেকে চাপ দিয়ে এই ধরনের নিউজ করানো হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানাব, যাতে করে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও ফ্রিডম অব প্রেস থাকে’।
নতুন দলে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে দেশের মানুষের একটা আকাঙ্খা তো আছেই। কিন্তু কোন দলে যুক্ত হব, কখন যুক্ত হবে, সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এটা ধরে নেওয়ার কারণ নেই যে নতুন রাজনৈতিক দলেই যুক্ত হব। যখন আমি রাজনীতি করার চেষ্টা করব, তখন আমার জন্য বেস্ট অপশনটাই বেছে নেব’।
পিডিবিএফের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, ‘১ হাজার ৬৬৫টি পদের বিপরীতে পরীক্ষা দিচ্ছেন ২ লাখ ৩ হাজার ৪৯৪ জন। প্রতি পদের বিপরীতে পরীক্ষা দিচ্ছেন ১২২ জন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে প্রায় ৬০ হাজার শূন্য পদ আছে। এর মধ্যে অধিকাংশই স্বায়ত্তশাসিত পৌরসভাগুলোতে। কিন্তু আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেগুলো আছে, সেগুলোতে ৩ হাজার ৫০০ জনের সার্কুলার গিয়েছে। আগামি দুই মাসের মধ্যে এই মন্ত্রণালয়ে আরও ১০ হাজার নিয়োগ করব’।