কালুরঘাট সেতুতে যান চলাচল শুরু

4

নিজস্ব প্রতিবেদক

কালুরঘাট সেতু সংস্কার কাজের জন্য প্রায় ১৫ মাস বন্ধ থাকার পর পুনরায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ১০ টার দিকে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। প্রথমদিন টোল ছাড়াই যানবাহন চলাচল করেছে সেতুতে।
এদিকে সেতু পারাপার উন্মুক্ত করার পর শুরুর দিকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একমুখী সেতুতে উভয় পাশ থেকে যানবাহন উঠে গেলে সেতুতে ব্যাপকভাবে যানজট লেগে যায়। রেলওয়ে কিংবা ইজারাদার কর্তৃপক্ষের কেউ সেতু তদারকিতে না থাকায় যত্রতত্রভাবে যানবাহন পারাপার করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে সেতুতে যাতে ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারে সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রেলওয়ে। সেতুর প্রবেশমুখে কংক্রিটের উচ্চতা প্রতিবন্ধকতা দেয়া হয়েছে। যে কারনে সেতুতে ৮ ফুট উচ্চতার বেশি যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত পূর্বদেশকে বলেন, কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সকাল ১০ টার দিকে সেতুতে যান চলাচল উন্মুক্ত করা হয়। প্রথমদিনে কোনো ধরনের টোল আদায় হয়নি। টোল ইজারার বিষয়টি ভ‚-সম্পত্তি বিভাগ দেখেন’।
সিএনজি অটোরিকশায় করে সেতু পার হতে অপেক্ষমান যাত্রী শাপলা চৌধুরী বলেন, ‘সেতুটি এতদিন বন্ধ থাকায় প্রচুর দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বোয়ালখালী, পটিয়াসহ নদীর পূর্বপাড়ের বিভিন্ন কলকারখানায় চাকরি করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেতু বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ওয়াকওয়ে থাকায় অনেকেই পায়ে হেঁটে চলাচল করেছে। এবার সেতুতে গাড়ি চলাচল শুরু হওয়ায় ভালো হয়েছে। আগামিতে নতুন সেতু হলে ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ পুরোপুরি নিরসন হবে’।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩১ সালে কালুরঘাট রেলসেতু নির্মিত হয়। পরে ১৯৬২ সালে যান চলাচল শুরু হয়। কালুরঘাট রেলসেতুর বয়স এখন ৯৩ বছর। ৬৩৮ মিটার দীর্ঘ সেতুটি ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০০৪ সালের ১৩ আগস্ট ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুতে বড় ধরনের সংস্কার কাজ করা হয়েছিল। এরপর ২০১২ সালে আরেক দফা সংস্কার করেছিল রেলওয়ে। কিছুদিন না যেতেই সেতুটির অবস্থা পুনরায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সেতুটির ওপর দিয়ে ট্রেনের পাশাপাশি বোয়ালখালী ও পটিয়াগামী গাড়িও চলাচল করতো। কিন্তু সেতুটি নড়মড়ে হওয়ায় বুয়েটের পরামর্শক দল সেতুটি ব্যবহারে ঝুঁকির কথা জানালে সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। গত বছরের ১ আগস্ট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।