কালীপুরের লিচু ছোট হলেও দারুণ স্বাদের

1

বাঁশখালী প্রতিনিধি

বাজারে আসতে শুরু করেছে বাঁশখালীর ঐতিহ্যবাহী কালীপুরের লিচু। আকারে ছোট হলেও স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় দেশজুড়ে কদর রয়েছে বাঁশখালীর কালীপুরের লিচুর। আর ৮-১০ দিন পরই দেদারসে পাওয়া যাবে এ লিচু। কালীপুরের লিচুর বাগানগুলোতে গাছে গাছে ঝুলছে পাকা টসটসে লিচু। যা আকৃষ্ট করছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের।
বাঁশখালী মূলত কালীপুরের লিচুর জন্যই বিখ্যাত। তবে উপজেলার সাধনপুর, পুকুরিয়া, বৈলছড়ি, গুণাগরী, জঙ্গল জলদী, জঙ্গল চাম্বল ও পুইছড়ি ইউনিয়নের পাহাড়ি ও সমতল এলাকাতেও বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ হয়।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বাঁশখালীতে নিবন্ধিত ৭১০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে, যার মধ্যে ৩০০ হেক্টরই কালীপুর ইউনিয়নে। এছাড়া বিভিন্ন বাড়ির আঙিনাসহ হিসাবের বাইরে থাকা বাগান মিলিয়ে পুরো উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৮০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের লিচুর চাষ হয়েছে। এর মধ্যে কালীপুরের স্থানীয় জাত ছাড়াও রাজশাহী বোম্বে, বারি-১, ২, ৩ ও ৪ এবং চায়না-৩ জাতের লিচু রয়েছে। তবে স্থানীয় জাতের চাষই বেশি হয় এখানে।
চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে পরে কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির ঝুঁকি এড়াতে রঙ ধরা লিচু এখনই বাজারে তুলতে শুরু করেছেন অনেকে।
বর্তমানে মৌসুমের শুরুতে প্রতি একশ লিচু ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে চাষিদের আশা, আর কয়েকদিনের মধ্যে যখন পুরোদমে লিচু বাজারে আসবে, তখন দাম কিছুটা কমে যাবে এবং ফলের স্বাদ ও পুষ্টিগুণও বাড়বে। আগামী ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বাজার লিচুতে ভরে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইজ্জতনগর এলাকার লিচু চাষি আবদুল মজিদ জানান, তার দুই একরের বাগানে আগের মতো ফলন না হলেও যা হয়েছে, তা বিক্রির উপযোগি। পাইকারি হিসাবে প্রতি হাজার লিচু তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।
পাইকারি লিচু ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন বলেন, বাইরের পাইকার এবার কম আসছে। খুচরা বাজারেই বেশি লিচু বিক্রি হতে পারে। বাগান পাহারাসহ আনুষঙ্গিক খরচ বিবেচনায় গতবারের মতো এবারও প্রতি একশ লিচুর দাম ২০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে থাকবে।
কালীপুরের অন্যতম বড় বাগানের মালিক জালাল উদ্দীন ঝিনুক জানান, তাদের তিনটি বাগানে প্রায় এক হাজার গাছ রয়েছে এবং পাহাড়ি বাগানে ফলন বেশ ভালো। আগামী সপ্তাহ থেকে তাদের লিচু বাজারে আসবে। স্থানীয় পাইকারদের কাছে পুরো বাগান অগ্রিম বিক্রি (লাগিয়ত) করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা আয় হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অফিসার আবু সালেক জানান, এবার বড় ধরনের ঝড়-বৃষ্টি না হওয়ায় বাঁশখালীতে লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে শেষ পর্যন্ত ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
তিনি আরও জানান, ফলন বাড়াতে এবং আধুনিক জাতের চাষাবাদে চাষিদের উৎসাহিত করতে কালীপুর ঋষিধামসহ বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।