নিজস্ব প্রতিবেদক
মৌসুমি ফল লিচু সুবাস ছড়াচ্ছে বাঁশখালীর জনপদে। সেখানকার বিখ্যাত কালীপুরের লিচুতে ভরপুর প্রতিটি বাগান। গাছে গাছে ঝুলছে লাল রঙের টসটসে লিচু। ঝুপড়ি গাছগুলোর শাখা-প্রশাখায় লিচু আর লিচু। বৈশাখের শেষ সপ্তাহ থেকে জৈষ্ঠের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বাঁশখালীর লিচু বাজারে আসবে। এবার ঝড়-বৃষ্টির আধিক্য না থাকায় বাঁশখালীতে লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। সারা বাঁশখালীতে ৭১০ হেক্টর বাগানে স্থানীয় ও উন্নত জাতের লিচু চাষ হয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র কালীপুরেই ৩০০ হেক্টর বাগানে লিচু চাষ হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবু সালেক পূর্বদেশকে বলেন, ‘এবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৭১০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় ও উন্নত জাতের লিচু চাষ হয়েছে। এখানকার লিচুর প্রচুর চাহিদা আছে। ঝড়-বৃষ্টির আধিক্য না থাকায় বাঁশখালীতে লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। গাছে গাছে লিচুর রঙ আসতে শুরু করেছে। লিচু পুরোদমে বাজারে আসতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। আবহাওয়া এমন অনুকূলে থাকলে এবার রেকর্ড ফলন হবে। লিচুর ফলন যাতে ভালো হয় সেজন্য কালীপুর ঋষিধামসহ বেশকিছু স্থানে চাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আধুনিক উন্নত উফসী জাতের চাষের বিষয়েও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
বাঁশখালী কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পুঁইছড়ি, চাম্বল, জলদী, কালীপুর, বৈলছড়ি, সাধনপুরে ৭১০ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ২৪৭টি করে গাছ আছে। এরমধ্যে রাজশাহীর বোম্বে, বারি ১,২,৩,৪ ও চায়না থ্রি জাতের লিচুর চাষ হয়েছে বেশি। তবে বাঁশখালীতে স্থানীয় জাতের লিচু চাষ হয় বেশি। যে কারণে কালীপুরের লিচুর চাহিদা আছে দেশজুড়ে। চায়না থ্রি জাতের লিচুর শাঁস বড়, বিচি ছোট। ফলনও আসে দেরিতে। এখানকার স্থানীয় জাতের লিচু শাঁস ও বিচি ছোট হলেও আগেভাগেই ফলন আসে। কালীপুরে এবার নতুন বাগান সৃজন তেমন হয়নি। সবগুলো পুরাতন বাগান। বাগানে ফলন ভালো হয়েছে, লিচুর রঙও এসেছে। ১০-১৫ দিনের মধ্যেই পুরোদমে বাজারে লিচু আসবে। লিচু পরিপক্ষতার পর্যায়ে থাকায় বর্তমান সময়ে যে বৃষ্টি হচ্ছে এতে কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
কালীপুরের সবচেয়ে বড় বাগানের মালিক জালাল উদ্দিন ঝিনুক বলেন, ‘আমাদের তিনটি বাগানে প্রায় এক হাজার লিচু গাছ আছে। গহীন পাহাড়ে সৃজিত বাগানগুলোতে প্রচুর লিচু ধরেছে। আগামী সপ্তাহ খানেক পর লিচু বাজারে আসবে। স্থানীয় পাইকারদের কাছেই বাগান লাগিয়ত করা হয়েছে। সবগুলো বাগান লাগিয়ত করে ৫ লক্ষ টাকার মতো আয় হয়।
পাইকারী লিচু ব্যবসায়ী কায়সার উদ্দীন পূর্বদেশকে বলেন, বাইরের পাইকার আসছে কম। ধারণা করছি খুচরা বাজারেই বেশি লিচু বিক্রি হবে। লিচু বাগান নেয়ার পর পাহারায় শ্রমিক দিতে হয়েছে। আনুষঙ্গিক কিছু খরচও বাড়বে। সে হিসেবেই বাজার দর নির্ধারণ করা হবে। বিগত বছরের বাজার দর ধরেই এবারও ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত ১শ’ লিচুর দাম পাওয়া যাবে।