আইনজীবী, রাজনীতিক, ক‚টনীতিক। মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার ষোলঘর গ্রামে ১৯১২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্ম। রাজনীতি ও ক‚টনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান সত্তে¡ও তিনি লেখক হিসেবেই সমধিক খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯২৯ সালে তিনি বরিশাল জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৩১ সালে বি.এম কলেজ থেকে আই.এ পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৪ সালে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে বি.এ (অনার্স), ১৯৩৫ সালে এম.এ এবং ১৯৪৪ সালে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকার আরমানিটোলা স্কুলের শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবনের সূচনা হলেও পরবর্তী সময়ে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ এবং ক‚টনৈতিক দায়িত্ব পালন শেষে আইন ব্যবসায়ে আত্মনিয়োগ করেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে তিনি মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা উত্তরকালে মুসলিম লীগের প্রতিক্রিয়াশীল কর্মকান্ডের জন্য তিনি এ দল ত্যাগ করেন। তিনি ছিলেন ১৯৪৭ সালে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য। ১৯৫৪ সালে তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগের সঙ্গে যুক্ত হন এবং পরের বছর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। এক পর্যায়ে তিনি সক্রিয় রাজনীতি ত্যাগ করে ক‚টনীতিকের পেশা গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৭-১৯৫৮ সালে কলকাতায় এবং ১৯৫৮-১৯৬১ সালে বার্মায় যথাক্রমে পাকিস্তানের ডেপুটি হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ সালে তিনি আইনব্যবসা শুরু করেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অক্টোবর মাসে তাঁকে গ্রেফতার করে এবং স্বাধীনতার পর ১৭ ডিসেম্বর তিনি মুক্তি পান। তিনি ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি (১৯৭৬-১৯৭৮) ছিলেন। কামরুদ্দীন আহমদের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে A Social History of Bengal (1957), A Socio-political History of Bengal, The Birth of Bangladesh,, পূর্ব বাংলার সমাজ ও রাজনীতি (১৯৭৬), বাংলার মধ্যবিত্তের আত্মবিকাশ (দুই খন্ড), স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয় এবং অতঃপর (১৯৮২), বাংলার এক মধ্যবিত্তের আত্মকাহিনী। ১৯৮২ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। সূত্র: বাংলাপিডিয়া