রাউজান প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাস্তার মাথা এলাকায় নতুন করে শুরু হওয়া টোকেন বাণিজ্যের প্রতিবাদে রাউজানে সড়ক অবরোধ করে করেন অটোরিকশা চালকরা। এ সময় তারা অবিলম্বে টোকেন বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন। তারা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখেন প্রায় ৩ ঘণ্টা। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার কয়েকশ অটোরিকশা চালক জড়ো হয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন নোয়াপাড়া পথেরহাট ও নোয়াপাড়া কলেজ এলাকায়। এ কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। সড়কের দুপাশে আটকা পড়ে বাস, ট্রাকসহ সব ধরনের পরিবহণ।
অটোরিকশা চালকদের বেশির ভাগই গাড়ি বন্ধ রেখে সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে বেলা ১ টার দিকে রাউজান থানা পুলিশ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা অটোরিকশা চালকদের বুঝিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
অটোরিকশা চালকরা জানান, চান্দগাঁও থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে টোকেন বাণিজ্য বন্ধের আশ্বাস দিলে চালকরা সড়ক থেকে সরে যান।
একাধিক অটোরিকশা চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই রাস্তার মাথায় রাউজান, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাঙ্গামাটির অটোরিকশা প্রতি মাসে ৮০০ টাকা চাঁদা দিয়ে টোকেন নিতে হতো কাপ্তাই রাস্তার মাথা অটোরিকশা ও টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের সমিতির নামে। ৫ আগস্টের পরে তা বন্ধ হয়। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে আবারও টোকেন বাণিজ্য চালু করে কিছু চাঁদাবাজ। আগে ৮০০ টাকা নেওয়া হলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে। চালকদের অভিযোগ, শত শত অটোরিকশা থেকে এভাবে চাঁদাবাজি হচ্ছে।
এ কারণে গতকাল শুক্রবার নোয়াপাড়া পথেরহাটে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেন চালকরা। নোয়াপাড়া কলেজের সামনে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করা হয়। আন্দোলনের খবর পেয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করতে ছুটে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। পুলিশকে তারা এ সমস্যা সমাধানে অনুরোধ করেন।
ছাত্র আন্দোলনের রাউজানের নোয়াপাড়া প্রতিনিধি ইফতিয়ার হোসেন বলেন, অবরোধ তুলে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে তারা কাজ করেন। পরে চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশকে দ্রæত সমাধানের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করা হয়।
রাউজানের অটোরিকশা চালক মুহাম্মদ জাহেদ বলেন, সরকার পতনের পর মনে করেছিলাম সড়কে এসব নৈরাজ্য, চালকদের উপর জুলুম বন্ধ হবে। কিন্তু আগের চেয়ে এখন চাঁদার টাকা দিগুণ গুণতে হচ্ছে। এমন হলে চালকদের আয়ের টাকা পথেই শেষ হয়ে যাবে।
মুহাম্মদ শাকিল নামে রাঙ্গুনিয়ার এক চালক বলেন, কাপ্তাই রাস্তায় মাথায় আগে প্রতি অটোরিকশার জন্য ৮০০ টাকায় দেওয়া হতো এক মাসের টোকেন। গত এক সপ্তাহ ধরে সেটি ১ হাজার ৫০০ টাকা করে নেওয়া শুরু হয়েছে।
চালকদের অভিযোগ, স্থানীয় মুহাম্মদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি এই চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দেন।
রাউজান থানার পরিদর্শক দিপ্তেশ দাশ বলেন, অটোরিকশা চালকরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন। পরে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। চান্দগাঁও থানার মাধ্যমে রাউজানের ওসি মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বিষয়টি সমাধান করবেন। চালকদের সঙ্গে বসে শিগগির চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে।