পূর্বদেশ ডেস্ক
বিমান বাংলাদেশের নিয়মিত ফ্লাইটে নয়, কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া। আগামীকাল সোমবার লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন ঢাকা ফেরার সূচিতে এ কারণে কিছুটা বদল আসবে। গতকাল শনিবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব তথ্য দেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় বহরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার খবর জেনে তখন বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি পাঠিয়েছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির আমির। চার মাস লন্ডনে কাটিয়ে সোমবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত একটি ফ্লাইটে সিলেট হয়ে ঢাকায় ফেরার কথা ছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের। খবর বিডিনিউজের।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা করছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সোমবার কাতারের একটি বিশেষ বিমানে যেটা আমরা আশা করছিলাম যে বিমানে (এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে) অর্থাৎ কাতারের রয়েল অ্যাম্বুলেন্স তিনি লন্ডনে গিয়েছিলেন সেই অ্যাম্বুলেন্সের ফ্লাইটে দেশে ফিরে আসবেন। সময়টা আমরা এখন নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কারণ এই সময়টা নির্ভর করবে বিভিন্ন বিষয়ের ওপরে। এটা যদি আজকে (শনিবার) রাত্রে অথবা কালকে (আজ) নিশ্চিত হই আমরা আবার গণমাধ্যমের মাধ্যমে সেটা জনগণের কাছে পৌঁছিয়ে দেবে।
এর আগে শুক্রবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ফেরার বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, বিএনপির তরফ থেকে দুই সপ্তাহ আগে কাতারে যোগাযোগ করা হয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও বিষয়ে জানানো হয়। কিন্তু কারিগরি কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ায় বিলম্ব হওয়ায় তিনি (খালেদা জিয়া) বিমানের ফ্লাইটে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
বিমানের ফ্লাইটের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাতারের অ্যাম্বুলেন্সের নিশ্চয়তাটা কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত আমরা পাইনি। আগে তো বিমানের ফ্লাইটের সিডিউল ছিল বেলা ১১টায়।
এর আগে শুক্রবার ফখরুল বলেছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের আগ্রহ অনুযায়ী বিমানের সোমবারের ফ্লাইটে (বিজি-২০২) খালেদা জিয়াসহ তার দুই পুত্রবধূ এবং অন্যান্যদের টিকেটসহ সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে দলীয় প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনায় শনিবার রাতে যৌথসভা ডাকা হয়েছিল গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিএনপি মহাসচিব দলের চেয়ারপারসনের দেশের ফেরার সর্বশেষ অবস্থা জানান।
নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা : মির্জা ফখরুল বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আমাদের আহবান থাকবে, অত্যন্ত শৃঙ্খলার সাথে রাস্তার দুই ধারে কোনো যানজট সৃষ্টি না করে তারা তাদের এই মহান নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
আমরা সেটা সাজেস্ট করেছি, এক হাতে জাতীয় পতাকা, আরেক হাতে বিএনপির পতাকা নিয়ে আমরা নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাব। এটা হচ্ছে আমাদের সিদ্ধান্ত। আমাদের নেতৃবৃন্দ দায়িত্ব নিয়েছেন তারা শৃঙ্খলা বজায় রেখে যাতে নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে পারে সেই ব্যবস্থা তারা করবেন।
জনসাধারণ ও গণপরিবহনের প্রতি আহব্বান : বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের কাছে আমাদের আহব্বান থাকবে এ ফ্লাইট আসার পরে অথবা আগে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেটা আছে তারা যেন সেই পথটি ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। আমার বিশ্বাস জনগণ সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করবেন এবং তারা তাদের প্রিয় নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানানোর ব্যবস্থা করবেন।
তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, এদিনেও অনুরোধ করব, আপনাদের গাড়িগুলোকে নিয়ে ওই যে সামনে গিয়ে কভার করার চেষ্টা করেন তাতে করে হয় কী অনেক সময় দেখা যায় যে, আমাদের লোকজন ম্যাডামের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে হাঁটতে শুরু করে। এতে গুরুতর সমস্যা তৈরি হয়। আমি এজন্য একথা বারবার করে বলছি, উনি (খালেদা জিয়া) আসবেন প্রায় ৭/৮ ঘণ্টার ফ্লাইটে আসবেন। ঢাকায় আসার পরে বাসায় (গুলশানের ফিরোজায়) ফিরতে যদি উনার আরও ৪/৫ ঘণ্টা লাগে তাহলে তো রাস্তায় উনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। সুতরাং আমাদের উচিত হবে যত দ্রুত সম্ভব বিমানবন্দর থেকে বাসায় যেতে পারেন সেটাকে নিশ্চিত করা।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার দুই পুত্রবধূ (জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান) আসছেন।