কর্ণফুলী রক্ষায় ঐতিহ্যবাহী সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতা

0

কর্ণফুলী প্রতিনিধি

একসময় বৈশাখের অপেক্ষায় থাকত কর্ণফুলীর দুই তীরের মানুষ। সব আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল নৌকাবাইচ। কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছিল ঐতিহ্যের সেই নৌকাবাইচ। এখন শুধু ঐতিহ্য রক্ষা নয়, চট্টগ্রামের প্রাণ কর্ণফুলীকে বাঁচানোর লড়াইয়েও নামতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। কর্ণফুলীকে দখল-দূষণমুক্ত রাখতে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো তিন দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে পালন করে আসছিল নানা কর্মসূচি।
গতকাল রবিবার বিকাল পাঁচটার দিকে নগরীর অভয়মিত্র ঘাট থেকে চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট এলাকা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতার খেলা। এবারের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান বাইচের ১৯তম আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইছানগর।
আয়োজকরা জানান, কর্ণফুলীকে বাঁচাতে বিগত এক যুগ ধরে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে স্থানীয়ভাবে আয়োজন করা হয় সাম্পান বাইচ। এতে স্থানীয় কয়েক ডজন সাম্পান সমিতি অংশ নেয়।
প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে কর্ণফুলী নদীর উত্তর-দক্ষিণ উভয় পাড়ে স্থিতিশীল পানিতে প্রতি বছর সাম্পান বাইচ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। পাশাপাশি নদীর দক্ষিণ পাড়ে বিশাল এলাকাজুড়ে চাটগাঁইয়া মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন প্রধান অতিথি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহŸায়ক ইদ্রিস মিয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাম্পান বাইচ উদ্বোধন করেন।
এদিকে সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে হাজারো মানুষের ঢল নামে। দুপুর থেকে বিচিত্র সাজে সজ্জিত দৃষ্টিনন্দন এসব সাম্পান তুমুল বাইচ শুরু করে। বিকাল ৫ থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ প্রতিযোগিতা। দু’ক‚লে দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো সমর্থক ও দর্শক মাল্লাদের সাথে সমবেত হন। তারা উৎসাহ দেন বাইচে। নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের করতালি ও হর্ষধ্বনিতে এলাকা মুখর হয়ে ওঠে। গোটা এলাকায় সঞ্চারিত হয় উৎসবের আমেজ।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করে বলেন, কর্ণফুলী নদী আমাদের প্রাণ। এ নদীকে আমরা বাঁচিয়ে রাখবো। এ নদীকে আমরা দূষিত করবো না। নদীর জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলবো না। তিনি বলেন, নদীর আশেপাশে কতগুলো সন্ত্রাস রয়েছে যারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু সংগ্রহ করে নদীর গতিপথ পালটে দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ১১টি দল। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন আগত অতিথিবৃন্দ। রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।