‘কর্ণফুলী নদীবন্দর বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিরে যাবে’

7

 

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম বিভাগ, উত্তর দক্ষিণ মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে ‘কেমন চট্টগ্রাম চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভা ৮ এপ্রিল বিকাল ৩টায় নগরীর নূর আহমদ সড়কস্থ মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট এম এ হাশেম রাজু। উত্তর জেলার আহŸায়ক সৈয়দ মোস্তফা আলম মাসুম এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদী দখলে ও দূষণে এমন পর্যায়ে চলে গেছে যার ফলে অচিরেই কর্ণফুলী নদীবন্দর বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিরে যাবে।
প্রধান বক্তা ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহব্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, বাংলাদেশের ন্যায় সারা পৃথিবীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে। আমাদের দেশে আইনের সুশাসন ও গণতন্ত্র আজ সংকুচিত। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের মহাসচিব প্রফেসর ড. এম এ গফুর বলেন, এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী আজ দখল ও দূষণে ধ্বংসের পথে। অথচ আজ দেখার কেউ নেই।
বাপসার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী বলেন, কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী ৫৩টি শিল্পসহ ৮৯টি উৎসের বর্জ্যরে ফলে নদী দূষিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়া নদীর তীরবর্তী ৮১ প্রজাতির উদ্ভিদ আজ বিলুপ্তির পথে। নদীতে নির্গত এসব বর্জ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি থাকার কারণে মানবদেহ ও অন্যান্য প্রাণী মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে গবেষণায় ধরা পড়েছে। গবেষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, চট্টগ্রামে মোগল আমলের ২ শতাধিক পাহাড়ের এখন কোনো চিহ্নও নেই। বৃহত্তর চট্টগ্রামের অক্সিজেনের প্রাণকেন্দ্র পাহাড় ও বন উজাড় করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পাহাড়ের মাটি কেটে ইট ভাটা তৈরি করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অক্সিজেনের অভাবে মানুষ, জীবজন্তু, পশু পাখি ক্রমান্বয়ে বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হবে। প্রফেসর ড. সাখাওয়াত আলী বলেন, বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের শতকরা ৮০ভাগ চট্টগ্রাম বন্দর থেকেই যোগান দিয়ে আসছে। অথচ চট্টগ্রামের খেলার মাঠ, শিশু পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদনের কেন্দ্র তৈরি করার কোন উদ্যোগ নাই। তাছাড়া সিআরবি, জিয়া পার্ক শিশু পার্ক, জাতিসংঘ পার্ক সহ বিভিন্ন বিনোদনের কেন্দ্র আজ বিলুপ্তির পথে। প্রফেসর ড. এম এ জলিল বলেন, চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হলেও এটা শুধু কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। দৈনিক দেশজগত পত্রিকার সম্পাদক কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী বলেন, দেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট চলমান রয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে আজ নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে।
সভাপতির বক্তব্যে এম এ হাশেম রাজু বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের মূল কাজ হচ্ছে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনে সহযোগিতা করা। দেশের সর্বাগ্রে আজ মানুষ তার সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আনোয়ার হোসেন লিপু, মাঈনুদ্দীন আহমেদ, মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী, প্রফেসর সৈয়দ আব্দুল মাবুদ, আব্দুল আহাদ, আমির হোসেন খান, মো. ইউসুফ, তাহেরা আকতার শারমিন, ইঞ্জি. আবু তৈয়ব, আব্দুর রহিম, তৌহিদুল করিম, এস. এম. কামরুল ইসলাম, নুরুল আবচার তৌহিদ, আওরঙ্গজেব খান সম্রাট, মো. ইসমাইল ইমন, আবু বক্কর সিকদার, মোহাম্মদ ওসমান, প্রফেসর রুপম বড়ুয়া, মো. নওশাদ, মো. সুজন, শারমিন সরকার, জোহরা মরিয়ম, মো. আজমগীর, মো. সুমন, মো. রিদুয়ান আলী, মো. হেলাল উদ্দিন, আবুল কাশেম, প্রফেসর ইসমত আফিয়া ইরা প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি