করোনা আক্রান্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

49

ব্রিটিশ রাজপরিবারে আঘাত হেনেই থেমে থাকেনি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)। থাবা বসিয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ওপরও। পরীক্ষায় তার করোনা ভাইরাস পজেটিভ পাওয়া গেছে। এদিকে, কোনো দেশের সরকারপ্রধান হিসেবে তিনিই প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১ টার দিকে টুইটারে একটি ভিডিওবার্তায় এ খবর আবার তিনি নিজেই দিয়েছেন। বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টা ধরে আমি লক্ষণগুলো হালকা হালকা টের পাচ্ছিলাম। আর তখনই পরীক্ষা করাই। যাতে ধরা পড়ে করোনা ভাইরাস পজেটিভ।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমি স্বেচ্ছায় আইসোলেশনের আছি। তবে এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে হলেও সরকারি নেতৃত্ব-দায়িত্ব ঠিকই পালন করে যাব। এর জন্য ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থা করা হবে। একইসঙ্গে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধও গড়ে তোলা হবে। একই টুইটে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সবাইকে ‘ঘরে থাকুন এবং নিরাপদ জীবনযাপন করুন’ এই আহব্বানও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বরিস জনসন বর্তমানে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে আছেন। তার মধ্যে সাধারণ লক্ষণ রয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের। খবর বাংলানিউজের
স্বাস্থ্যমন্ত্রীও আক্রান্ত : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হানককেরও একই সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এক টুইট বার্তায় ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন তার উপসর্গগুলো মৃদু এবং বাড়িতে থেকে কাজ চালিয়ে যেতে পারছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, করোনা মহামারি মোকাবিলয়ায় ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিভাগের তৎপরতার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ম্যাট হানকক।
বিশ্বজুড়ে মহামারির রূপ নেওয়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আঘাত হেনেছে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালীদেরও ওপর। গত ২৫ মার্চ ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর শুক্রবার (২৭ মার্চ) সকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বরিস জনসনের সংক্রমণের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ম্যাট হানককের সংক্রমণের কথা জানা যায়। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে আমার উপসর্গগুলো মৃদু এবং বাড়িতে ও স্বেচ্ছায় বিচ্ছিন্ন থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। জীবন রক্ষায় আমাদের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার পরামর্শ মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ’।
ইন্ডিপেন্ডেন্টের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ক্রিস হুইটি এবং প্রধান বৈজ্ঞানিক পরামর্শক প্যাট্রিক ভ্যালান্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ব্রিটিশ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আক্রান্ত হওয়া নিয়ে আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ে তারা দুজনেই প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হানককের সঙ্গে গত সপ্তাহে নিয়মিত বৈঠক করেছেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৬৫৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছেন ৫৭৮ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩৫ জন।