এপ্রিলের শুরুতে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও বাড়তে থাকে কোভিড (করোনা) সংক্রমণের হার। পাশাপাশি বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যাও। ক্রমবর্ধমান রোগীদের জায়গা দিতে হাসপাতালগুলোতে সৃষ্টি হয় শয্যাসংকট। তবে ধীরে ধীরে নগরীর হাসপাতালগুলোতে কমতে শুরু করেছে কোভিড রোগীর চাপ। বর্তমানে নগরীর সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল মিলে ১৬’শ কোভিড বেডের ৯০৪ বেডই খালি রয়েছে।
এছাড়াও হাসপাতালগুলোতে ২৩টি আইসিইউ শয্যা খালি রয়েছে। অথচ কয়েকদিন আগেও আইসিইউ বেডের জন্য হাহাকার ছিল চট্টগ্রামে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮০ কোভিড বেডের মধ্যে রোগী ভর্তি আছে ১২০ জন। অবশিষ্ট ৬০ বেড খালি রয়েছে। জেনারেল হাসপাতালে ১৪০ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৪৭ জন। অবশিষ্ট ৯৩ বেডই খালি রয়েছে।
বিআইটিআইডি হাসপাতালে ৩২ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ১৪ জন। মা ও শিশু হাসপাতালের ১১৮ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৮০ জন। রেলওয়ে হাসপাতালের ৫৪ বেডের সবকটিই খালি রয়েছে। হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১০০ কোভিড বেডের সবগুলোই খালি রয়েছে। আল মানাহিল নার্চার হাসপাতালে ৪৩ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ২৯ বেডে। ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের ৩৫ কোভিড বেডের সবকটিতে রোগী ভর্তি আছেন।
পার্কভিউ হাসপাতালের ৫৬ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৬০ জন। ম্যাক্স হাসপাতালে ৫৩ বেডের বিপরীতে কোভিড রোগী ভর্তি আছেন ৩৯ জন। ডেলটা হাসপাতালে ৩৫ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৭ জন। সিএসসিআর হাসপতালে ২২ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ১৭ জন। সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতালে ৭০ বেডের বিপরীতে কোভিড রোগী ভর্তি আছেন ৪৩ জন। ন্যাশনাল হাসপাতালে ৫৪ বেডের মধ্যে কোভিড রোগী ভর্তি আছেন ২৭ বেডে। মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৫০ কোভিড বেডের মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ৩২ জন।
এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলে ৯৪ আইসিইউ বেডের মধ্যে ২৩টি খালি আছে। এর মধ্যে চমেক হাসপাতালে ৬টি, জেনারেল হাসপাতালে ৪টি, ডেলটা হাসপাতালে ৪টি, ম্যাক্স হাসপাতালে ৩টি, ন্যাশনাল হাসপাতালে ৩টি, সিএসসিআর হাসপাতালে ২টি এবং পার্কভিউ হাসপাতালে ১টি আইসিইউ বেড খালি রয়েছে।
এ বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আহমেদ তানজিমুল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, আগের তুলনায় রোগী ভর্তি অনেকটা কমেছে। আগে প্রতিদিন ১২-১৫ জন রোগী ভর্তি হতেন। বর্তমানে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হচ্ছেন ৬-৭ জন। পাশাপাশি চট্টগ্রামে সংক্রমণ এবং মৃত্যুও কমেছে। বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে ৩৯ রোগী ভর্তি আছেন।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বদেশকে বলেন, লকডাউনের ফলে মানুষ ঘর থেকে কম বের হওয়ার কারণে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও সংক্রমণ অনেকটা কমেছে।
প্রশাসনের তদারকির কারণে মানুষ আগের চেয়ে অনেকটা সচেতন হচ্ছেন। শুধু মাস্ক পরার মাধ্যমে ৯০ শতাংশ সংক্রমণ কমানো সম্ভব। তাই মানুষের সচেতনতাই জরুরি। তবে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে।