এম এ হোসাইন
চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল এক মাসের বেশি সময় ধরে কমিটি বিহীন অবস্থায় আছে। কমিটি বিলুপ্ত হলেও নেতৃত্বের সংকট তৈরি হচ্ছে না নগর যুবদলে। কারণ দীপ্তি-শাহেদের নেতৃত্বে সক্রিয় নেতা-কর্মীরা ঐক্য বজায় রেখেছেন। এ অবস্থায় আজ সংগঠনের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কার্যক্রম হাতে নিয়েছে নগর যুবদল। এছাড়া বিপ্লব উদ্যানে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও প্রতিটি ওয়ার্ডে বর্ণাঢ্য র্যালি করা হবে।
মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা বর্ণাঢ্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। সকাল থেকে দিনব্যাপী মেডিক্যাল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচি থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চিকিৎসা ক্যাম্প করা হবে। স্বতঃস্ফূতভাবে এ কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
জানা গেছে, মহানগর যুুবদলের ইতিহাস অনেক পুরনো। সংগঠনটির নেতৃত্বে ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ নেতারা। নগর যুবদলের নেতৃত্বে থাকা নেতাদের মধ্যে একরামুল করিম সভাপতি ও কাজী আকবর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একরামুল করিম সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন হেদায়েতুল ইসলাম। পরে সৈয়দ আজম উদ্দিনকে আহব্বায়ক ও কাজী বেলাল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে গঠন করা আহব্বায়ক কমিটি ছিল ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত আবুল হাসেম বক্কর সভাপতি ও কাজী বেলাল উদ্দীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।২০১১ সালে কাজী বেলাল উদ্দিনকে সভাপতি করে সাধারণ সম্পাদক করা হয় মোশাররফ হোসেন দিপ্তীকে। ২০১৮ সালে এসে মোশাররফ হোসেন দীপ্তিকে সভাপতি করে মুহাম্মদ শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এর মধ্যে দীপ্তি-শাহেদের কমিটিকে কঠিন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে হয়।
মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ বলেন, আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছি। সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনে আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। বর্ণাঢ্য আয়োজনে ব্যতিক্রমভাবে এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হবে। বিপ্লব উদ্যানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ছাড়াও দিনব্যাপী ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প থাকবে। থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়েও নানা কর্মসূচি থাকবে।
মহানগর যুবদলের অতীত ইতিহাস গৌরবের হলেও সেখানে বড় সমস্যা কোন্দল। প্রতিটি কমিটি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়েছে। তবে তার ব্যতিক্রম ছিল সদস্য বিলুপ্ত মোশাররফ হোসেন দীপ্তি ও মুহাম্মদ শাহেদের কমিটি।
দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার পরও দীপ্তি-শাহেদ দলীয় প্রতিটি কর্মসূচিগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করে কেন্দ্রে প্রসংশিত হন।
তারা জড়াননি কোন কোন্দলে। যার কারণে ওয়ার্ড ও থানা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পেরেছিলেন। সংগঠনকে হ-য-ব-র-ল অবস্থা থেকে সাংগঠনিক কাঠামোতে দাঁড় করানোর মাধ্যমে দীপ্তি-শাহেদ দক্ষতার পরিচয় দেন। তবে এরই মধ্যে গত ২১ সেপ্টেম্বর বিলুপ্ত করা হয় নগর যুবদলের কমিটি। একই সাথে নগর যুবদলের আওতাধীন ওয়ার্ড-থানা কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্র। এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনও নতুন কমিটি ঘোষণার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কমিটিহীন নগর যুবদলকে সাবেক কমিটির নেতারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।