কমছে সবজি ও ডিমের দাম স্থিতিশীল তেল-চিনি

2

নিজস্ব প্রতিবেদক

শীত আসার আগেই নগরীসহ দেশের বিভিন্ন বাজার ছেয়ে গেছে শীতের আগাম শাক-সবজিতে। ফলে গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কিছুটা কমে বাজারে এসেছে স্বস্তি। একই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে ফার্মের ডিমের দামও। তবে তেল, চিনি, লবণসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। গতকাল শুক্রবার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকার পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকরা এখন আগাম লাভের আশায় শীতকালীন সবজির আবাদ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে, ফলে বাজারে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, লাউসহ নানা শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে।
বর্তমানে বাজারে শিম বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়। লাউ মিলছে প্রতিটি ৫০ থেকে ৮০ টাকায়। অন্যদিকে মুলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।
এ বিষয়ে রিয়াজউদ্দিন বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. কালাম বলেন, “এখন ক্রেতাদের আকর্ষণ শীতের সবজির দিকে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে দুই সপ্তাহের মধ্যেই সরবরাহ আরও বাড়বে, তখন দাম আরও কমবে।”
সবজি কিনতে আসা ক্রেতা মারুফুল ইসলাম বলেন, “নতুন সবজি একটু দামি হলেও কিনতে ইচ্ছে করে। গত সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজিতে শিম কিনেছিলাম, আজ পেলাম ১২০ টাকায়। মুলা ও কপির দামও ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে।”
এদিকে বেগুনের বাজারেও দামে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। লম্বা বেগুন ও ছোট বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগেও গোল বেগুনের দাম ছিল ১৫০ টাকা সেটা এখন ১০০ টাকায় এসেছে। চিচিঙ্গা, ঝিঙা, করলা, পটল ও ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। পেঁপে মিলছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
বরাবরের মতোই আলুর বাজারে স্থিতি বজায় আছে। কেজিপ্রতি দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। ফার্মের ডিমের দামও কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ডজনপ্রতি ১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। পাড়া-মহল্লার দোকানে এখনো কিছুটা বেশি দাম নেওয়া হলেও পাইকারি বাজারে সরবরাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়, আর সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়।
মুরগি বিক্রেতা আবু সিদ্দিকী বলেন, শীতকালে মুরগি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মারা যায়। তাই শীতকাল আসলে সরবরাহ কম থাকে। ফলে বাজারে দাম একটু বাড়তি থাকে।
মুদি বাজারে তেল, চিনি, লবণ, ডাল, চালের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। ভোজ্যতেল লিটারপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়, চিনি কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা, আর লবণ ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মৌসুমভিত্তিক সবজির সরবরাহ বাড়লে আগামী মাসে নিত্যপণ্যের বাজারে আরও স্থিতিশীলতা আসবে। তবে পরিবহন ব্যয় ও জ্বালানির মূল্য না কমলে দাম দ্রুত নামার সম্ভাবনা কম।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ পূর্বদেশকে বলেন, “বাজার দর স্বাভাবিক রাখার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাজার মনিটরিং প্রতিনিয়ত চলছে, কোনো সিন্ডিকেটকে সুযোগ দেওয়া হবে না।”