কদলপুর আইডিয়াল হাইস্কুল সড়কের কাজে অনিয়ম

2

রাউজান প্রতিনিধি

রাউজানের কদলপুর আইডিয়াল হাই স্কুল সড়কের আরসিসি ঢালাই কাজ প্রকল্পে এজিং নির্মাণে নিম্নমাণের ইট ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সড়কের পাশে গাইডওয়ালের পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে এজিং। কিন্তু এজিং নির্মাণে বেশি গভীরতা না থাকায় সেটিও যে কোনো সময় ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে পুরো প্রকল্পটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ জনগণের কোনো উপকারে আসবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিমত, শুধু নিম্নমাণের ইট ব্যবহার বন্ধ নয়, পুরো প্রকল্পটি পুনঃমূল্যায়ন করে সড়কের পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করতে হবে।
সড়কে নিম্নমাণের ইট ব্যবহার নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্কুল সংশ্লিষ্টরাও কাজের মান নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এমন নিম্নমাণের ইট ব্যবহার করলে সড়কটির স্থায়িত্ব থাকবে না।
অবশ্য অভিযোগ পাওয়া পর গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা সহকারী ভূমি অফিসারের নেতৃত্বে একটি টিম সড়ক উন্নয়ন কাজে অনিয়ম তদন্ত করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাউজানের হাফেজ বজলুর রহমান সড়ক সংযোগস্থল থেকে কদলপুর আইডিয়াল হাইস্কুল পর্যন্ত সড়কে কংক্রিট ঢালাই কাজের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের (সম্মুখে ১৮ ফুট) এ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। দুই পাশে ১০ ইঞ্চি করে দেয়াল ও দেড় ফুট এজিংয়ের কাজও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গত দুই-তিনদিন আগে ঠিকাদার নয়ন এ কাজ শুরু করেন। কিন্তু প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে একেবারেই নিম্নমাণের ইট। কাজের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ থাকলেও যথাযথ মান বজায় না রাখলে সড়কটি কিছুদিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাবে, যা জনদুর্ভোগ বাড়াবে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে তদন্তের দাবি করেছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কদলপুর আইডিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘কাজটির দায়িত্বে আছেন ঠিকাদার নয়ন। তিনি ২ নম্বর ইট এনে ব্যবহারের জন্য রেখেছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে তাকে ব্যক্তিগতভাবে আপত্তি জানিয়েছি। নয়ন বলেছেন, ‘এজিংয়ের কাজ এভাবেই হয়’। কাজটি বুঝে নেবেন উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা’।
জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘কাজের শুরুতে নিম্নমাণের ইট ব্যবহারের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী, ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের মৌখিকভাবে আপত্তি জানিয়েছি, তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে জানানো হয়নি’।
এ বিষয়ে জানতে কদলপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ্যানি বড়ুয়াকে ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, ‘কাজটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে হচ্ছে। আমরা তদারকিতে আছি। ২ নম্বর ইট ব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে সহকারী প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে’।
অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অভিযোগ পেয়েছি। মঙ্গলবার উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্তে যাব। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব’।
নিম্নমাণের ইট ব্যবহার প্রসঙ্গে ঠিকাদার নয়ন বলেন, ‘কাজের সিডিউলে যা উল্লেখ আছে, সে অনুযায়ী কাজ করছি। প্রয়োজনে আমার বক্তব্য যেখানে দেয়া দরকার লিখিতভাবে সেখানে দিব’।