কক্সবাজারের সেই মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’

1

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার শহরে কর্মরত সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেলকে ইয়াবার মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (এডি) এ কে এম দিদারুল আলমকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন, অর্থ ও পরিকল্পনা) মো. আবদুল ওয়াদুদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, সহকারী পরিচালক (এডি) এ কে এম দিদারুল আলমকে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত রংপুরে সংযুক্ত করা হলো। ফলে বর্তমান কর্মস্থল হতে তিনি তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন এবং আগামি ১৮ মার্চের মধ্যে বদলিকৃত স্থানে যোগদান করবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিকালে প্রধান কার্যালযের পরিচালক (চিকিৎসা ও পুনর্বাসন) মো. মাসুদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক তদন্তের প্রেক্ষিতে এডি দিদারুল আলমকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ (তাৎক্ষণিক অবমুক্ত) করা হয়েছে। আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে। পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স¤প্রতি কক্সবাজার মাদকদ্রব্যের এডি দিদার সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেলকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অপচেষ্টা করেন। এ ঘটনায় দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ক্ষোভে ফুঁসে উঠে সাংবাদিক সমাজসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এমতাবস্থায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাহিদ হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারে তদন্ত কার্যক্রম চালানো হয়।
তদন্ত দল অভিযুক্ত এডি দিদারুল, তার টিমের অন্যান্য সদস্য, ভুক্তভোগী সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষ্যগ্রহণ করে ও লিখিত জবানবন্দি নেয়। একই সঙ্গে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ভিডিও ও অন্যান্য প্রমাণাদি সংগ্রহ করা হয়। যা পরে ওই রাতেই ই-মেইলযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এডি দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে ইয়াবা ব্যবসায়ী প্রমাণের চেষ্টার অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পায় তদন্ত দল। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে তাকে শাস্তিস্বরূপ স্ট্যান্ড রিলিজ করলো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
জানা গেছে, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. হাসান মারুফের নির্দেশে এডি দিদারুল আলমের অপকর্মের অভিযোগ তদন্তের জন্য আরও ছয় সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের দল বর্তমানে কক্সবাজার অবস্থান করছেন। সেখানে ভুক্তভোগী সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) মোস্তাক আহমেদ বলেন, প্রধান কার্যালয়ের তিনজনসহ মোট ৬ জনের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দল গত শনিবার থেকে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। প্রাথমিকভাবে এডি দিদারুলের বিরুদ্ধে আজ (গতকাল) ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।