নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরীর পাহাড়তলি বাজারের সুলতানের মালিকানাধীন ভবনের ছাদ থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তিকে ‘ফাঁদে ফেলে’ হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকালে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকান্ড ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
এর আগে শনিবার সকালে একজন পথচারী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করে জানান, ডবলমুরিং থানার পাহাড়তলি বাজারের সুলতানের মালিকানাধীন ভবনের ছাদে একজন পুরুষের মৃতদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে লাশটি উদ্ধার করে। এরপর পরিচয় শনাক্তের জন্য নগরীর সব থানায় নিহতের ছবি পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে বাসা থেকে বের হন নিহত রণজিত দত্ত নিলক (৫৪)। তিনি একটি বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা। শুক্রবার রাত ৮টার পর্যন্ত রণজিতের সাথে টেলিফোনে তার স্ত্রীর কথা হয়। তারপর থেকে আর যোগাযোগ করতে না পেরে নগরীর পাহাড়তলি থানা ও আকবর শাহ থানায় যান রণজিতের স্ত্রী শিপ্রা মজুমদার। ওই দুই থানা থেকে ডবলমুরিং থানা এলাকায় অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের তথ্য পেয়ে শনিবার দুপুরে সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন রণজিতের পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় শনিবার অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন রণজিতের স্ত্রী শিপ্রা।
গতকাল রবিবার সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভ‚ইয়া বলেন, সোর্সের তথ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে শনিবার রাতেই পাহাড়তলি বাজারের সুলতান ভবন থেকে রুনা আক্তার ওরফে পিংকি আক্তার বিলুকে (৩৫) এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার সহযোগী ইব্রাহিম খলিল মিজানকে (৫০) দেওয়ানহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
“এই চক্রটি রণজিতকে ফাঁদে ফেলেছিল। রুনা আক্তারের সাথে কোনোভাবে তার একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। রণজিতকে কৌশলে ওই বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে রণজিতকে অচেতন করে ফেলে।” রুনা আক্তার পাহাড়তলি বাজারের সুলতান ভবনের ভাড়াটিয়া।
এক প্রশ্নে পুলিশ কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূইয়া বলেন, “রণজিতের মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভবনের দুই তলা থেকে একই ভবনের একতলার ছাদে অবচেতন অবস্থায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। “মিজানের কাছ থেকে রণজিতের মোবাইল ও মানিব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।”
রুনা ও মিজানের এই চক্রটি বিভিন্ন পেশাজীবী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা বিত্তবানদের টার্গেট করে টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিত জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ বলেন, “এটা এক ধরনের হানি ট্র্যাপের মত বিষয় হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। আরো জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের পর বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।” রণজিতের মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় রুনা ও মিজানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।