নিজস্ব প্রতিবেদক
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব প্রফেসর নারায়ন চন্দ্র নাথকে ওএসডি করা হয়েছে। ছেলের ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব চৌধুরী সামিয়া ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে নারায়ন চন্দ্র নাথকে ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নতুবা ওইদিনই তিনি স্ট্যান্ড রিলিজ বা তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য হবে বলে জানানো হয়েছে। এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে (ফৌজদারি মামলাসহ) মাউশির মহাপরিচালক ও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। একইসাথে তার সঙ্গে জালিয়াতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। সেদিন এ সংক্রান্ত পৃথক চারটি আদেশ জারি করে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব শতরুপা তালুকদার।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও বোর্ড সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে। প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে পাশ করিয়েছেন, এমন সন্দেহে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন জানিয়েছেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। সে সময় রহস্য উন্মোচনে তদন্ত এবং প্রভবামুক্ত পুনঃনিরীক্ষণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষাবিদেরা। কিন্তু সেটিও একসময় ধামাচাপা পড়ে যায়। পুনঃনিরীক্ষণ থামাতে গত ৫ নভেম্বর নগরের পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন বোর্ড সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী নাথ।
পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আব্দুল আলীম ও অধ্যাপক ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে প্রতারণা, কম্পিউটারে বেআইনি প্রবেশসহ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন নারায়ণ চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী নাথ। ট্রইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক এই সচিবের বিরুদ্ধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে মন্ত্রণালয়ের হাত ঘুরে ছেলেকে জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের তদন্তভার যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের কাছে। সর্বশেষ গত ১৫ সেপ্টেম্বর তদন্তে ফল জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নিতে নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।