ঐকমত্যের বৈঠক যে কারণে ‘বয়কট’ করল জামায়াত

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যে যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তার প্রতিবাদে জামায়াত কমিশনের বৈঠক ‘বয়কট’ করেছে বলে দলটির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, মঙ্গলবার (গতকাল) সকালে শুরু হওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যমত্য কমিশন দ্বিতীয় দফার সংলাপে তারা যোগ দেবেন না।
সকাল সাড়ে ১১টায় বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের মুলতবি বৈঠক শুরু হয়। আধাঘণ্টা দেরিতে বৈঠক শুরু হলেও জামায়াতের কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদের আসনের পাশের আসনটি জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জন্য রাখা হয়। তবে তা খালি দেখা যায়।
এর পরের আসনটি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি), সেখানে বসেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। এরপরে বসেছেন বিএনপির ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আমরা অন প্রোটেস্ট আজকের (মঙ্গলবার) বৈঠকে যাইনি। আগামীকাল (বুধবার) বৈঠকে যোগ দেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এখনই বলতে পারছি না। আমরা আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পরে যে যৌথ ঘোষণা বা বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয় তা ‘যথাযথ প্রক্রিয়ায়’ হয়নি বলে জামায়াত মনে করে বলে দলটির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন। তিনি বলেন, এজন্য আমরা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের বৈঠকে যাইনি। কারণ এই কমিশনের প্রধান হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস।
আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের বৈঠকের বিষয়ে কোনো কথা বলছি না। আমরা বলতে চাই, বৈঠকের পরে যেভাবে একটি দলের কথায় নির্বাচনের তারিখ বদলে দেওয়ার ঘোষণা হল, এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, দেশে ফিরে প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে স্পষ্ট করবেন।
সংলাপ থেকে বের হওয়ার পর ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াত কেন আসেনি সেটা তারা বলতে পারবে।
খাওয়ার বিরতির সময় জাতীয় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরও বলেন, সংলাপে জামায়েতে ইসলামী অংশ নেয়নি, আমাদের সংলাপে জানানো হয়েছে যে তারা প্রতীকী বয়কট করেছে। আমরাও মনে করি একটি-দুইটি দলকে প্রাধান্য দিয়ে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দিয়ে দিলেন, এটা কেন? নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কীভাবে বলবেন কোন দল কত বড়।
ঐকমত্য কমিশন বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ধাপে ধাপে আলোচনা হবে। এতে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্বসহ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে দ্বিমত রয়েছে সেসব বিষয়ে ঐক্যমত্যের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।