পূর্বদেশ ডেস্ক
আলোচিত ব্যবসায়ী মো. সাইফুল আলম (এস আলম) ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত গতকাল রোববার এ আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেছেন, দুদকের উপ পরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক এই ব্যবসায়ীর পরিবারের শেয়ার অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালত শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করে এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেয়। খবর বিডিনিউজের।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রæপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং অভিযোগটি অনুসন্ধানে একটি টাস্কফোর্স টিম গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে দুদক জেনেছে এস আলম গ্রæপ ও তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাতপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ করেছেন।এছাড়া এই ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যরা অস্থাবর সম্পদসমূহ অন্য জায়গায় হস্থান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করারও চেষ্টা করছেন বলে দুদক জেনেছে।
দুদকের ভাষ্য, অনুসন্ধান কাজ শেষ হওয়ার আগেই বসম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীতে টাকা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে যাবে। মামলা রুজু, আদালতে চার্জশিট দাখিল, বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুক‚লে বাজেয়াপ্ত করাসহ সকল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। সেজন্য এসব সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। এর আগে গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। এরপর গত ৩ ফেব্রুয়ারি তার ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার পাঁচশো টাকার ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেয় আদালত। গত ১২ ফেব্রæয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৪২টি কোম্পানির ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন অনিয়ম সামনে আসে।
চট্টগ্রামভিত্তিক এ গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলমের বিরুদ্ধে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, টাকা পাচার, আয়কর ফাঁকির অভিযোগ তদন্ত শুরু করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। দুদকও ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে।