পূর্বদেশ ডেস্ক
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সুবিধা পাওয়া চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা আরও ২০০ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। সংস্থার আবেদনে ২০০ দশমিক ২৬ একর জমির দলিলমূল্য ১৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা বলা হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
আবেদনে দুদক বলেছে, বলা হয়, মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘অর্থ পাচারের’ অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য টিম গঠন করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ‘নামে বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করে’ নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।এস আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের স্থাবর সম্পদ অন্যত্র ‘হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত’ করার চেষ্টা চলছে বলে দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে।
এর আগে ২৩ এপ্রিল এস আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে ঢাকা ও চট্টগ্রামে থাকা ১৫৯ দশমিক ১৫ একর জমি জব্দের আদেশ দেয় একই আদালত। দুদকের আবেদনে এসব জমির দাম বলা হয়েছে ৪০৭ কোটি টাকা।
১৭ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা এক হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। এসব হিসাবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে।
তার আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয় আদালত।
তারপর ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।
২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়। ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেয় আদালত। এরপর ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয়।
২৫ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুর আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করেছে দুদক। সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
আরেক মামলায় ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনেছে দুদক।
গতবছরের ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলে পর এস আলম গ্রুপের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধানে গতি পায়।