এবার হাতিয়া থেকে আরেকজন গ্রেপ্তার

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোডে প্রাইভেটকারে গুলি চালিয়ে জোড়া খুনের ঘটনায় এবার নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নাম মো. মেহেদি হাসান (৩৭)। পুলিশ দাবি করেছে, কারাবন্দী সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের অনুসারী ওই যুবক জোড়া খুনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জোড়া খুনের মামলায় এ নিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এছাড়া কারাবন্দী ছোট সাজ্জাদকে আদালতের নির্দেশে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা থেকে মেহেদি হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাড়ি নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানা এলাকায়। জোড়া খুনের মামলায় নগরীর বাকলিয়া থানায় দায়ের হওয়া মামলায় হাসান তিন নম্বর আসামি। পবিত্র রমজানে জোড়া খুনের ঘটনার পর হাসান চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নলের চর ভ‚মিহীন বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর গতকাল শনিবার ভোরে হাসানকে সঙ্গে নিয়ে বাকলিয়া থানা পুলিশ নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার পশ্চিম শহীদ নগর এলাকায় তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুইটি ম্যাগজিন ও দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল জব্দ করেছে।
পুলিশের ধারণা, জব্দ করা বিদেশি পিস্তলটি জোড়া খুনের ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে সেভেন পয়েন্ট সিক্সটি ফাইভ বোরের বিদেশি পিস্তলের গুলির খোসা পাওয়া গিয়েছিল। ওই খোসাটি হাসানের কাছ থেকে উদ্ধার করা পিস্তলের গুলির খোসা হতে পারে। পিস্তল ও খোসাটির ফরেনসিক পরীক্ষার পর এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এর আগে গত ২৯ মার্চ গভীর রাতে নগরীর বাকলিয়া থানার রাজাখালী এলাকা থেকে একাধিক মোটর সাইকেলে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রাইভেট কারকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। প্রাইভেট কারটি বাকলিয়া এক্সেস রোডের চন্দনপুরা প্রান্তে পৌঁছানের পর থেমে যায়। তখন বেপরোয়াভাবে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা। এতে দুজন নিহত ও দু’জন আহত হন। নিহতরা হলেন বখতেয়ার হোসেন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ। তাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। আহতরা হলেন- রবিন ও হৃদয়।
আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মো. রবিন জানিয়েছিলেন, প্রাইভেটকারটির চালক ছিলেন মানিক। এর মালিক ছিলেন আবদুল্লাহ। প্রাইভেটকারের চালক মানিকের পাশে ছিলেন অপরাধ কর্মকাÐের সঙ্গে জড়িত ছোট সাজ্জাদের প্রতিদ্ব›দ্বী সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। পেছনের সিটে আবদুল্লাহ, রবিন, হৃদয় ও ইমন ছিলেন।
রবিনের অভিযোগ, প্রতিদ্ব›দ্বী সরোয়ার হোসেন বাবলা কৌশলে ছোট সাজ্জাদকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেন বলে তার সন্দেহ ছিল। এজন্য সরোয়ারকে টার্গেট করে ছোট সাজ্জাদের অনুসারী সন্ত্রাসীরা কারটিতে গুলিবর্ষণ করে। তবে সরোয়ার প্রাণে বেঁচে যান।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা থেকে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর সরোয়ার ও সাজ্জাদের বিরোধ আরও জোরালো হয়। জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত বখতেয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে গত ১ এপ্রিল নগরীর বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন মোহাম্মদ হাছান (৩৬), মোবারক হোসেন ইমন (২২), খোরশেদ (৪৫), রায়হান (৩৫) ও বোরহান (২৭)।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর পরিকল্পনা অনুসারে আসামিরা গুলি করে মানিকসহ দুজনকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় বাকলিয়া থানা পুলিশ বেলাল, মানিক ও সজীব নামে তিনজনকে এর আগে গ্রেপ্তার করেছে। কারাবন্দি ছোট সাজ্জাদকেও আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার দেখানোর পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।