এবার গুজব প্রতিরোধে সক্রিয় হচ্ছে আ. লীগ

15

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তিনদফায় টানা ১২ বছর ক্ষমতায়। ক্ষমতার এ সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সফল আওয়ামী লীগ। তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। কিন্তু এ প্রযুক্তির কাছেই বারবার হেনস্থা হচ্ছে দলটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিয়মিত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয়েছে। প্রতিবারই এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ।
প্রতিপক্ষরা দেশ-বিদেশ থেকে বারবার এমন গুজব ছড়ালেও তার বিরুদ্ধে অনলাইনে তেমন সোচ্চার হতে পারেনি ক্ষমতাসীন দলটি। এবার গুজব প্রতিরোধে দলটি বৃহৎ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সংগঠনের চারটি পদে সমন্বয় ঘটিয়ে ‘অনলাইন একটিভিস্ট গ্রুপ’ তৈরির করতে চায় আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমরা চিন্তা করছি যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকদের সঙ্গে অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের যারা এ চারটি পদে রয়েছেন, তাদের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। তারপর তৃণমূল পর্যায়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সব ধরনের গুজবের জবাব দেওয়া হবে। তার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
রাজনীতির মাঠে একছত্র আধিপত্য আওয়ামী লীগের। দাপুটে আওয়ামী লীগের প্রভাবে রাজনীতির মাঠ থেকে একপ্রকার বিতাড়িত বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলো। ইসলাম ভিত্তিক দলগুলোও সরকার বিরোধী অবস্থানে। নতুন করে সংগঠিত হয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে মরিয়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। খোলস পাল্টে অনলাইনেই সক্রিয় জামায়াত-শিবিরও।
আওয়ামী লীগকে চাপে রাখতে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলগুলো অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে দেশে গুজব ছড়িয়ে বড় ধরনের সহিংসতাও ঘটানো হয়েছে। প্রতিটি ঘটনার পেছনেই রাজনৈতিক ইন্ধন খুঁজে পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার বিরোধী গুজব ছড়িয়ে একটি মহলকে উস্কে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটানো হয়েছে সহিংসতা। গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফরকালেও গুজব ছড়িয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে হেফাজত। এ তাÐবে অনেকের প্রাণহানি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনার।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে সরকারের প্রতিপক্ষরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বারবার অপপ্রচার চালালেও সরকারকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপরই নির্ভরশীল হতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো এ অপপ্রচারের জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠীসহ সরকার বিরোধীরা।
দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনকে ইতোমধ্যে অনলাইনে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদেরকেও গুজব প্রতিহত করার আহব্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সংগঠনের দপ্তর, প্রচার, তথ্য ও গবেষণা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকদের এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ‘জয়বাংলা এ্যাপ’ তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার হয়েছে দলটি।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর বলেন, ‘দেশ, দল ও সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ঠেকাতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে প্রযুক্তিতে দক্ষ নেতা-কর্মী সৃষ্টি করা হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে অনলাইন একটিভিস্ট গ্রুপ। একটি পরিপক্ষ অনলাইন টিম তৈরি করতে আমরা ইতোমধ্যে সভাও করেছি। কেন্দ্র থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের এ গ্রুপে সংযুক্ত করা হবে। যারা গুজব প্রতিরোধে কাজ করবেন।’