এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে মোদী-ইউনূস বৈঠক ‘চায়’ বাংলাদেশ

2

আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে নরেন্দ্র মোদী ও মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করার তথ্য দিয়েছে ভারতের একটি সংবাদমাধ্যম। ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের খবরে বলা হয়, আগামী মাসের শুরুতে থাইল্যান্ডে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রতিবেশী দেশ দুটির সরকারপ্রধানের এ বৈঠক করতে চায় বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সাত দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক জোট ‘বিমসটেক’ এর ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন ২ থেকে ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডে হওয়ার কথা। এ সম্মেলনে যোগ দিতে সেসময় প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর থাইল্যান্ডে যাওয়ার কথা রয়েছে। খবর বিডিনিউজের
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে উদ্ধৃত করে এএনআই লিখেছে, বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে একটি বৈঠক করার ব্যাপারে আমরা ক‚টনৈতিকভাবে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।
বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সপ্তাহ খানেক আগে (২৬ মার্চ) চীন সফরে যাবেন মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে ২৮ মার্চ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে তার। এদিকে বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) প্রেসিডেন্ট ও সিইও কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বে আসা একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় মুহাম্মদ ইউনুস ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন।
এ বৈঠকের তথ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাক্ষাতের শেষ দিকে প্রধান উপদেষ্টা আক্ষেপ করে বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচারের বেশিরভাগই ভারতীয় সংবাধমাধ্যম থেকে ছড়ানো হচ্ছে। ছাত্র-জনতার তুমুল গণআন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। এর তিন দিন পর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর থেকে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গে প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর দুই দফায় দেখা হওয়ার সুযোগ তৈরি হলেও তা হয়ে ওঠেনি। এবার বিমসটেকের এ সম্মেলনে তা আবার হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ জোটের ষষ্ঠ এই শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। কিন্তু থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে তা পিছিয়ে নভেম্বরে করার চিন্তাভাবনা করা হয়। ওই সময়ও ইউনূস ও মোদির বৈঠকের কথা উঠেছিল। পরে ওই বৈঠক আবার পিছিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকেও দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের কথা উঠেছিল। কিন্তু শেষমেশ তা আর হয়নি। কারণ হিসেবে গত ২১ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে। কাজেই সেখানে তাদের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে। ওই বৈঠক না হওয়ার কারণ হিসেবে সেসময় মুহাম্মদ ইউনূসের ‘একটি সাক্ষাৎকারকে’ সামনে আনে কোনো কোনো ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। দুদেশের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে জানাশোনা আছে, এমন ব্যক্তিদের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূসের বিভিন্ন মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে, বৈঠকটি হবে না। ইউনূসের বক্তব্য নয়া দিল্লি ভালোভাবে নেয়নি।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেছিলেন, বাংলাদেশ ফেরত না চাওয়া পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) চুপ থাকা উচিত।
মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে সাক্ষাৎ হতে পারত গত বছরের অক্টোবরেও; সামোয়াতে কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে। কিন্তু দুই নেতার কেউই তাতে যোগ দেননি।