নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত আওয়ামী লীগ নেতাদের বাদ দিয়ে পুলিশ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী, সাধারণ চাকরিজীবী, শ্রমিক- কাউকে হয়রানি থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে না। এদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মামলা থেকে বাদ দেয়ার জন্যও চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কারাভোগ করে জামিনে বের হয়ে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ সাহেদ।
তিনি চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে তাকে অজ্ঞাত আসামির তালিকায় ঢুকিয়ে কারাভোগ করান মামলার বাদি মো. এরশাদ।
তিনি বলেন, আমাকে আটক করার পর আমার ম্যানেজারকে ডাকা হয়েছিল। ১২ লাখ টাকা দিলে আমাকে কোন মামলা দেয়া হবে না বলা হয়। কিন্তু আমি অন্যায় না করেও কেন আমাকে মামলা দেয়া হবে? সেজন্য আমি কোন টাকা-পয়সা দিইনি। তাই আমাকে ২২ দিন কারাগারে অবস্থান করতে হয়। তারা শুধু আমার একটা অপরাধ খুঁজে পায়, সেটা হল-আমার অফিসে শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার ছবি ছিল। এখন আমার কথা হচ্ছে, শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার ছবি রাখা তো সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক ছিল। তাহলে এখানে সকলেই তো অপরাধী। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৬ হাজার ২০২টি মামলা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে, তাহলে বুঝা যায়, দেশে কি পরিমাণ মামলা বাণিজ্য হয়েছে এবং হচ্ছে। নুর মোহাম্মদ সাহেদ বলেন, আওয়ামী লীগের বড় বড় রাঘববোয়ালরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তাদেরকে না ধরে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে আর নিরীহদের আটক করার পর অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মামলা দিয়ে দিচ্ছে। আবার বাদির সাথে রফাদফা হলে মামলা থেকে বাদ দিয়ে দিচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন সেক্টরে এখনও আওয়ামী লীগের দোসররা বহাল তবিয়তে রয়েছে। যাদের জন্য এখনও দেশ নিরাপদ নয়। তারায় দেশের ক্ষতি করে দিচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থায় ভাল মানের কর্মকর্তাদের পদায়ন করুন। তাতেই দেশের উন্নতি সাধন হবে। আমি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করায়, একাধিকবার হামলা এবং অপহরণের শিকার হয়েছি, মামলা করেও সুরাহা পাইনি বরং শেষমেষ আমাকে বৈষম্য বিরোধীর মামলায় ফাসানো হয়েছে। এরকম যেন কোন সাধারণ মানুষ বা ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা না হয়। মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো না হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট আবুল মনছুর সিকদার এবং বৈষম্যবিরোধী হালিশহর থানার ছাত্র প্রতিনিধি ও পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আরাফাত রহমান উপস্থিত ছিলেন।