আসহাব আরমান
বছরের প্রথম দিনে নতুন বই হাতে শুরু হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস। তবে এবার শিক্ষাবর্ষের এক মাস পার হলেও নতুন বই হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। কোন কোন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা একটি বইও পায়নি এমন ঘটনাও আছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে। বাকি ক্লাশগুলোতেও যে দুয়েকটি বই পেয়েছে তাতেও নেই প্রধান বিষয়। হিসাব অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ীর ৬৫ শতাংশ এবং প্রাথমিকের ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনও বই পায়নি। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তবে ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ সবগুলো বই পাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে মাধ্যমিকে এ বছর বইয়ের চাহিদা ১ কোটি ৭৪ লাখ কপি। ইতোমধ্যে বই এসেছে ৬৫ লাখ কপি। এখনও প্রায় ৬৫ শতাংশ বই আসেনি। মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সবগুলো বই এসেছে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির ৩ বিষয়ে বই এসেছে। দশম শ্রেণির সবগুলো বই এসেছে। এদিকে ইবতেদায়ীতে ৪র্থ ও ৫ম, ষষ্ঠ, ৮ম শ্রেণির বই এখনও আসেনি। নবম ও ৭ম শ্রেণির ৩টি করে বই পেয়েছে। দশম শ্রেণির সবগুলো বই পেয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় প্রাথমিকে বইয়ের চাহিদা ছিল ৪০ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৬ কপি। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে বই এসেছে ২৮ হাজার ৭৮ হাজার ৪৪৫ কপি। চাহিদার তুলনায় বই এসেছে ৬৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অর্থাৎ এখনও বই পায়নি জেলায় ৩৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থীরা। একই চিত্র জেলার প্রাক-প্রাথমিক বইয়ের ক্ষেত্রেও। প্রাক- প্রাথমিকে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৮২ কপি চাহিদার বিপরীতে বই এসেছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩১ কপি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে চাহিদার প্রায় ৬৫ শতাংশ বই এসেছে। আসা মাত্রই বইগুলো বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি বইগুলো। প্রতিদিন বই আসছে। আজকেও (গতকাল) বই আসবে। আমরা আশা করছি আগামী কয়েকদিনের মধেই সবগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারবো।’
এদিকে মাধ্যমিকের বিভিন্ন স্কুলে একটি বইও পায়নি অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। বই না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা। নগরীর রহমানিয়া স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান পূর্বদেশকে বলেন, ‘স্কুলের অন্যান্য শ্রেণিতে দুয়েকটা করে বই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। আমরা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখনও একটি বইও পাইনি। শিক্ষাবর্ষের এক মাসে চলে গেছে। প্রতিদিন স্কুলে এসে খালি হাতে বসে থাকি। বই আরও হাতে পাই না। সঠিক সময়ে বই হাতে না পাওয়ায় আমাদের পড়ালেখা বিঘিœত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ৬৫ লাখ কপির মত বই পেয়েছি। মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সবগুলো বই এসেছে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির ৩ বিষয়ে বই এসেছে। দশম শ্রেণির সবগুলো বই এসেছে। এদিকে ইবতেদায়ীতে ৪র্থ ও ৫ম ষষ্ঠ, ৮ম শ্রেণির বই এখনও আসেনি। নবম ও ৭ম শ্রেণির ৩টি করে বই পেয়েছি। দশম শ্রেণির সবগুলো বই পেয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের হাতে দ্রুত সময়ে বই তুলে দিতে। সবগুলো বই পেতে ফেব্রæয়ারি মাস লাগতে পারে বলে ধারণা করছি।’