এখতিয়ার বাড়ল মানবাধিকার কমিশনের

0

পূর্বদেশ ডেস্ক

এখতিয়ার ও কাজের পরিধি বাড়িয়ে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এর সঙ্গে কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন অধ্যাদেশ ও জুলাই স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশও অনুমোদন পায়। বৈঠক শেষে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এসে আইন উপদেষ্টা বিস্তারিত তুলে ধরেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, আগে মানবাধিকার কমিশন ছিল নখদন্তহীন। নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি ছিল; কমিশনের এখতিয়ারে মারাত্মক ঘাটতি ছিল। আমরা এটাকে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছি। মানবাধিকার কমিশন যেন সত্যিই এখতিয়ার সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হয়, সেরকমভাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছি।
নতুন সংযোজনগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, মানবাধিকারের সংজ্ঞা সম্প্রসারিত করা হয়েছে। সংবিধানে যে মৌলিক অধিকার আছে, সেটার বাইরেও বাংলাদেশ যেসব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণায় অনুসমর্থন করেছে বা পক্ষভুক্ত হয়েছে, এমনকি আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইনে মানবাধিকারের যেসব ধারণা আছে, সেগুলোর ক্ষেত্রেও মানবাধিকার কমিশন ভূমিকা রাখতে পারবে।
মানবাধিকার কমিশন গঠন করা হবে চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য দ্বারা। চেয়ারপারসন ও কমিশনারের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করার জন্য আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের বাছাই কমিটি করা হবে।
নিয়োগের জন্য একটা গণবিজ্ঞপ্তি হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে উচ্চ আদালতের বিচারকদের নিয়োগের মতো।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আগেকার মানবাধিকার কমিশনের একটা সীমাবদ্ধতা ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে তাদের তদন্তের এখতিয়ারে ঘাটতি ছিল। এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকার বা রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কমিশনকে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে।
গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও গুমের শিকার ব্যক্তি সুরক্ষাসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের মূল দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনকে দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
হেফাজতে মৃত্যু সংক্রান্ত যে আইন আছে, সেই আইনে পরিবর্তন এনে মানবাধিকার কমিশনকে সেটার তদন্তের ক্ষমতা দেওয়া যাবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, কিডনি বা অন্য যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে গেলে প্রচলিত আইনে পরিবারের সদস্যরা শুধু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করতে পারতো। আমরা দেখতাম, অন্য দেশে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বাইরেও টাকা পয়সা দিয়ে অন্যের কাছ থেকে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংস্থাপনের চেষ্টা করা হতো। নতুন আইনে শুধু পরিবারের সদস্য নয়, যাদের সঙ্গে ‘ইমোশনাল এটাচমেন্ট’ আছে, তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়েও প্রতিস্থাপন করা যাবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশের বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, সাবেক ‘ফ্যাসিস্ট’ প্রধানমন্ত্রী, যার এখন গণহত্যার দায়ে বিচার হচ্ছে, ওনার বাসভবন জুলাই জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটা পৃথক জাদুঘর হবে।