মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান
বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রæ সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গতকাল রাতে স্থলমাইন বিস্ফোরণে ইউনুছ নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের ডান পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মিয়ানমারের লাল কাইন্দায় এই ঘটনা ঘটে। আহত যুবকের নাম ইউনুছ (২৫)। তিনি কুতুপালং রোহিঙ্গাক্যাম্পের বাসিন্দা এবং এজাহার হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ইউনুছ গুরুতর আহত হন। এসময় তার চিৎকারে বাংলাদেশি দুই যুবক ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্থানীয়দের মতে, আরাকান আর্মির নির্ধারিত রুট এড়িয়ে বিকল্প রুটে যাতায়াত করতে গিয়ে মাইনের কবলে পড়ছেন চোরাকারবারীসহ অনেকেই। গত এক সাপ্তাহে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে ৪ জনের পা বিচ্ছিন্ন হয়। সীমান্তে একের পর এক মাইন বিস্ফোরণে সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়ছে আতঙ্ক।
এদিকে গত বুধবার মাইন বিস্ফোরণে ওমর মিয়া নামে এক বাংলাদেশি যুবকের বাম পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।সীমান্তের জারুলিয়াছড়ি বিওপির ৪৬, ৪৭ পিলারের ৪শ মিটার দূরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। ওমর মিয়া কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়ার মৌলভীকাটার বাসিন্দা সাবের মিয়ার ছেলে।
গত সোমবার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের চাকমার কাটা সীমান্ত এলাকায় ৩৫ নম্বর পিলারের কাছে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে চিকিৎসা জন্য আসার পথে মাইন বিস্ফোরণে মিয়ানমারের রাখাইন যুবকের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার নাম ওলিমং তঞ্চঙ্গ্যা।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকাল ৪টার দিকে ওই যুবক মাইন বিস্ফোরণে বাম পা হারান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
অপরদিকে গত রবিবার একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের জামছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আরাফাতুল ইসলাম প্রকাশ বাদল নামে বাংলাদেশি এক তরুণের বাম পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি জামছড়ির খুইল্লা মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, জামছড়ি সাপমারা ঝিরি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে চোরাই পণ্য আনতে গিয়েছিল চোরাকারবারীরা। এই সময় সীমান্তেÍ আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ওই তরুণের পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিজিবি সূত্র জানায়, মিয়ানমারে সামরিক জান্তার সাথে চলমান সংঘর্ষের কারণে সীমান্তে মাইন পুঁতে রেখেছে আরাকান আর্মি। তবে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ যাতায়াত ও চোরাচালানরোধে কঠোর নজরদারি বাড়িয়েছে বিজিবি।