এক সাথে ৬ সন্তানের জন্ম দিলেন ঈদগাঁওয়ের মরিয়ম

2

ঈদগাঁও প্রতিনিধি

বেসরকারি হাসপাতাল ন্যাশনাল হসপিটাল চট্টগ্রাম লিমিটেড-এ ঘটেছে এক অনন্য ঘটনা। এক সাথে জন্ম নিয়েছে ৬টি শিশু, তাদের ৫ জন কন্যা ও ১ জন পুত্র। এই শিশুদের জন্ম হয়েছে স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে।
গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন সুলতানা লুলুর তত্ত্বাবধানে এসব শিশুর জন্ম হয়। বর্তমানে মা এবং নবজাতকরা সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
৬ নবজাতকের মা হলেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জাগিরপাড়ার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩০)। গত শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হাসপাতালে এই নবজাতকদের জন্ম হয়।
ঈদগাঁও ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য জয়নাল আবেদীন বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারের এই মা ৬ সন্তানের জন্ম দেন। চিকিৎসকদের পূর্বপ্রস্তুতি, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কারণে স্বাভাবিকভাবে এই ডেলিভারি সম্পন্ন হয়।
হাসপাতালের নিউনেটাল ইউনিট সূত্রে জানা যায়, ৬ নবজাতকের মধ্যে একজন ছাড়া সবার ওজন তুলনামূলকভাবে কম। তবে তারা ঝুঁকিমুক্ত। তাদের নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
ন্যাশনাল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কারিশমা সুলতানা বলেন, গত ৫ বছরে প্রতিমাসেই ন্যাশনাল হাসপাতালে একসঙ্গে ২ থেকে ৩ টা নবজাতক জন্মের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একসঙ্গে ৬ নবজাতকের জন্মের ঘটনা এবারই প্রথম। ১৯ সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় থেকে ওই মা লুলু ম্যাডামের তত্ত¡াবধানে রয়েছেন। তাকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। আমরা সম্ভাব্য জটিলতা আঁচ করতে পেরেছিলাম, তবে শেষমেশ স্বাভাবিকভাবে ডেলিভারি করাতে পেরে আমরা গর্বিত।
তিনি আরও বলেন, তিনি (৬ নবজাতকের মা) এ নিয়ে চারবার সন্তান জন্ম দিয়েছেন। দ্বিতীয়বার একসঙ্গে ৪ সন্তানের ভ্রুণ গর্ভে ছিল। কিন্তু সে সময় তা ৫ মাসের মাথায় নষ্ট হয়ে যায়। ওই সময় তিনি শারীরিক জটিলতায় অনেক কষ্ট করেছেন। কয়েকবছর পর আবার ১টা বাচ্চা হয়। এবার গর্ভধারণ করলে আল্ট্রাতে ৫ সন্তানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরপর তিনি লুলু ম্যাডামের তত্ত্বাবধানে চলে আসেন। রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা জানতাম ৫ জন বেবি হবে কিন্তু ডেলিভারির সময় দেখলাম ৬ জন। সাধারণত নরমাল ডেলিভারিতে ৪০ সপ্তাহের মতো সময় লাগে। যদি টুইন বেবি হয় তাও কমপক্ষে ৩৪ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নেওয়া হয়। কিন্তু এই বাচ্চাগুলো একটু অপরিপূর্ণ। ৩০ সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে গেছে।
এই চিকিৎসক বলেন, এক সাথে এতো শিশু জন্মানো ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় ডেলিভারির সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এজন্য আমরা সব রকমের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। আমরা মাথায় রেখেছি, কোনভাবেই মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে দেওয়া যাবে না। ডোনার থেকে শুরু করে ডেলিভারির আগে-পরে সব ধরনের মেডিসিন পর্যাপ্ত ছিল। যাতে ইমার্জেন্সি তৈরি হলে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।