এক বছরে বন্দুকের বলি ৪০ হাজার হত্যার চেয়ে আত্মহত্যাই বেশি

58

যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৭ সালে বন্দুকের গুলিতে ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। বন্দুক ব্যবহার করে হত্যা ও আত্মহত্যার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এই রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সেন্টারের (সিডিসি) সদ্য প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বন্দুকের গুলিতে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
এদের ৬০ শতাংশই আত্মহত্যা করেছেন।অস্ত্র আইনের শিথিলতাকেই বন্দুক সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধির নেপথ্য কারণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে সিডিসির পরিসংখ্যানে। দেখা গেছে, যেসব অঙ্গরাজ্যে বন্দুক আইন শিথিল বা বন্দুক মালিকেরা প্রভাবশালী সেই রাজ্যেই বন্দুক সহিংসতায় মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও বেশি।
মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীতে দেশটির নাগরিকদের ব্যক্তিগতভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার বৈধতা দেওয়া হয়। এর সুযোগে সংঘটিত একের পর এক বন্দুক হামলার প্রেক্ষাপটে ওবামা প্রশাসন বেশ কয়েকবার আগ্নেয়াস্ত্র আইন কঠোর করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বন্দুক ব্যবহারের মাধ্যমে সন্ত্রাস-সহিংসতা যেন সেখানকার সাধারণ আর স্বাভাবিক এক বাস্তবতা। গড়ে প্রায় ৩০,০০০ মানুষের মৃত্যু হয় বন্দুকের গুলিতে। এখন অনেক নাগরিকই এই সংশোধনীর পরিবর্তন চাইলেও বাধ সাজছে বৃহৎ অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১৭ সালে ১ অক্টোবর লাস ভেগাস শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত কনসার্টে বন্দুকধারীর হামলায় ৫০ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে সে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলা হিসেবে বিবেচিত। এছাড়া স্কুল শিক্ষার্থীরাও মাঝে মাঝেই বন্দুক ব্যবহারের মাধ্যমে সহিংসতা সৃষ্টি করে। তবে সিডিসির পরিসংখ্যান বলছে, বন্দুক ব্যবহার করে অন্যকে হত্যার পাশাপাশি আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। ২০১৭ সালে বন্দুকের গুলিতে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৩ জন। এরমধ্যে প্রতি এক লাখে ৪.৬ শতাংশ হারে ১৪ হাজার ৫৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে অন্যের বন্দুক হামলায়। বিগত বছরগুলোর বিবেচনায় এই হার বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। ২০০০ সালে এই হার ছিল ৩.৬। এদিকে লাখে ৬.৯ শতাংশ হারে ২০১৭ সালে বন্দুকে আত্মহত্যা করেছেন ২৪ হাজার মানুষ। ২০০০ সালে এই হার ছিল ৫.৯।
জামা নেটওয়ার্ক নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর বন্দুকের গুলিতে প্রাণ হারায় ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। এদের অর্ধেকই নিহত হয় ৬টি দেশে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বাকিদেশগুলো হলো ব্রাজিল, মেক্সিকো, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা এবং কলম্বিয়া। সিডিসির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি বছর লাখে ১২ জনের মৃত্যু হচ্ছে বন্দুকের গুলিতে। এর আগে ১৯৯৬ সালের পর থেকে ২০১০ সালে বন্দুকের গুলিতে লাখে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ১ জনের মৃত্যু হতো।