নিজস্ব প্রতিবেদক
কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার অভিযোগ তুলে চাকরি জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে অঙ্গীভূত বা সাধারণ আনসার সদস্যরা কর্মবিরতি দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর খুলশী থানাধীন ফয়’স লেক এলাকার রেঞ্জ অফিস এবং জুমার নামাজের পর আসকারদীঘির পশ্চিম পাড়ে জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয় ঘেরাও করে তারা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকালে তারা বাহিনীর পোশাক পরা ছিলেন।
জানা গেছে, সকাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কাস্টমস, বিভিন্ন বেসরকারি ডিপো, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সরকারি-বেসরকারি অফিসে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা দলে দলে নগরীর ফয়’স লেক এলাকায় রেঞ্জ কমান্ড্যান্ট কার্যালয়ে জড়ো হন। এসময় তারা চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। জুমার নামাজের পর দুপুর দু’টার দিকে কয়েক হাজার আনসার সদস্য বন্দর এলাকা থেকে পায়ে হেঁটে আসকারদীঘির পশ্চিম পাড়ে জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হন। এসময় সেনাবাহিনীর কয়েকটি টিম সেখানে গিয়ে তাদের বিক্ষোভ থেকে নির্বৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অঙ্গীভূত আনসার সদস্য মো. ইদ্রিস বলেন, আমরা অস্ত্রধারী প্রশিক্ষিত আনসার সদস্য। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও দপ্তরে সশস্ত্র পাহারা দিই।
গত ৫ আগস্টের পর সারাদেশে সব স্থাপনা ও থানা পাহারা দিয়েছি আমরা। সড়কে যানবাহন চলাচলে শৃংখলা রক্ষার দায়িত্বও পালন করেছি। পুলিশ বা ব্যাটালিয়ান আনসারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা দায়িত্ব পালন করি। অনেকক্ষেত্রে বেশি দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আমরা বৈষম্যের শিকার। আমাদের চাকরি জাতীয়করণ করা হয় না। এখন আমরা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি। জাহাঙ্গীর আলম নামের আরেক আনসার সদস্য বলেন, সকালে ফয়’স লেকে রেঞ্জ কমান্ড্যান্ট কার্যালয়ে আমাদের একজন আনসার সদস্যকে মারধর করেন জেলা কমান্ড্যান্ট সাইফুল্লাহ হাবিব। এজন্য আমরা জুমার নামাজের পর আসকার দীঘির পাড়ে জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছি। সারাদেশের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পাহারা দিই আমরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের কর্মবিরতি কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
বিক্ষোভরত আনসার সদস্যরা জানান, গত ১০ আগস্ট থেকে সারাদেশে সাধারণ আনসাররা এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক জাতিকে নানা মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন। সারাদেশে অঙ্গীভূত সাধারণ আনসার রয়েছেন ৬০ হাজারেরও কম। তারা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের দাবিগুলো দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তোলা হয় না। এ ব্যাপারে আনসারের রেঞ্জ বা জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয় থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।