চবি প্রতিনিধি
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং লাঞ্ছনার ঘটনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ৯ ছাত্রীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়ার পরও বহিষ্কৃতদের নিকট চিঠি না পৌঁছানোর বিষয়টি চরম সমালোচনার জন্ম দেয়। এরপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৫৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় বহিষ্কৃত ছাত্রীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করার সিদ্ধন্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে বহিষ্কার ও আত্মপক্ষ সমর্থনের বিষয়টি জানিয়ে ছাত্রীদের অধ্যয়নরত বিভাগ ও তার স্থায়ী ঠিকানায় চিঠি পৌঁছানো শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
চিঠি ইস্যুর ১৫ দিনের মধ্যে বিভাগীয় সভাপতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিতভাবে জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর স্থায়ী ঠিকানায় চিঠি পাঠাতে গিয়ে চরম অদক্ষতা ও গাফেলতির পরিচয় দিয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং লাঞ্ছনার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলোজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের রওজাতুল জান্নাত ও একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের জান্নাতুল মাওয়া মিথিলাকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করে প্রশাসন। তবে জান্নাতুল মাওয়া মিথিলার বাড়ির ঠিকানায় চিঠি পাঠাতে গিয়ে রওজাতুল জান্নাতের বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে রওজাতুল জান্নাত ক্ষোভ জানিয়ে তার ফেসবুক টাইমলাইনে একটি পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাঙ্গা-জোড়া প্রশাসনিক কার্যক্রম। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে নিয়জিত কর্মচারীরা এতো মূর্খ, অজ্ঞ, ইরেসপন্সিবল কিভাবে হয় আমার জানা নেই। জান্নাতুল মাওয়া মিথিলার চিঠি, রওজাতুল জান্নাতের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন আমার বিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। ফেনীর চিঠি রংপুরে এসেছে ঈদের দাওয়াত খাইতে। এবার রওজাতুল এর চিঠি জান্নাতুল মাওয়ার নামে ফেনীতে যাবে ঈদের দাওয়াত দিতে’।
রওজাতুল জান্নাতের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভেতরের মূল চিঠিটি ঠিকঠাকই আছে। কিন্তু যে খামে করে চিঠিটি ডাকে দেয়া হয়ে সে খামে জান্নাতুল মাওয়া মিথিলার নাম, তার পিতার নাম ও ফেনীর ঠিকানার জায়গায় রওজাতুল জান্নাতের নাম, তার পিতার নাম ও তার রংপুরের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। যার ফলে চিঠিটি জান্নাতুল মাওয়ার ফেনীর বাড়িতে যাওয়ার পরিবর্তে রওজাতুল জান্নাতের রংপুরের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি চিঠিগুলো সব ঠিকঠাক আছে কিনা চেক করেই সাইন করেছিলাম। ডাকে পোস্ট করার কাজটি ছিলো কেন্দ্রীয় প্রেরণ শাখার। চিঠিগুলো থেকে ঠিকানা দেখে খামে লেখার পর চিঠিগুলো খামে ঢুকানো উচিত ছিল। এই কাজ করতে গিয়ে তারা ভুল করেছে। তিনি আরো বলেন, আসলে আমাদের অনেক অদক্ষ লোকদের সাথে নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আমরা ১০০ কিলোমিটার গতিতে চললে তারা চলে ৩০ কিলোমিটার গতিতে। কিছুদিন আগেও কেন্দ্রীয় প্রেরণ শাখার একজনকে শাস্তি দিয়েছি। এই ঘটনায়ও যে জড়িত তাকে চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।